নোয়াখালীতে জ্বরে প্রবাসীর মৃত্যু, বাড়ী লকডাউন

নবীন, নোয়াখালী প্রতিনিধিঃনোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মোরশেদ আলম (৪৫) নামের এক ইতালি প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। করোনা ভাইরাসের উপসর্গ থাকায় সন্দেহে বাড়ীটি লকডাউন ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রসাশন।
সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার টিনা পালের নির্দেশে বাড়ীটি লকডাউন ঘোষণা করে বাড়ীটির সামনে লাল পতাকা স্থাপন করা হয়েছে। নিহত মোরশেদ আলম উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড পশ্চিম চাঁদপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক মাস আগে ইতালি থেকে দেশে আসেন মোরশেদ আলম। কিছুদিন আগে তিনি হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। জ্বর ও শ্বাস কষ্ট শুরু হলে তিনি স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের পরমার্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করেন। কিন্তু গত ১০-১২ দিন আগে তার শরীরের জ্বরের তীব্রতা বেড়ে গেলে পরিবারের লোকজন তাকে ঢাকা পাঠান। কিন্তু তিনি ঢাকা গিয়ে কোন প্রকার চিকিৎসা না নিয়ে বাড়ীতে ফিরে আসেন।
নিহতের স্বজন আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মোরশেদ আলম গত কয়েকদিন ধরে সর্দি, উচ্চ মাত্রায় জ্বর ও শ্বাস কষ্টে ভুগছিলেন। তার শরীরের অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শরীরের আরও অবনতি ঘটলে ভোরে ঢাকা নেওয়ার পথে মোরশেদ আলমের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মোরশেদ আলম দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ থাকলেও তিনি ভালো কোন চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে বাড়ীতে ছিলেন। আশংকাজনক অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে নিহতের বাড়ী লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ওই বাড়ীর চারটি পরিবারের ২৭জন সদস্যকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ওই প্রবাসীর প্রচন্ড শ্বাস কষ্ট ছিল। তার ফুসফুস সঠিক ভাবে কাজ করছিল না। রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাতেই ঢাকায় স্থানান্তর করা নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরিবারের লোকজন ভোরে তাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দ্যেশে রওনা দেন।
সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার টিনা পাল ওই প্রবাসীর বাড়ী লকডাউনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো মোমিনুর রহমান জানান, গত নভেম্বর মাসে ইতালি প্রবাসী মোরশেদ আলম বাড়ীতে এসেছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি কয়েকদিন ধরে সর্দি, জ্বর ও শ্বাস কষ্টে ভুগছিলেন। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তার মৃতদেহ বর্তমানে ঢাকা কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। নিহতের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষায় করোনা প্রজেটিভ আসলে নিহতের লাশ ঢাকায় দাফন করা হবে। আর নেগেটিভ আসলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা