মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, লন্ডন : গত সোমবার ব্রিটিশ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি আইএস-এ যোগ দেয়া বাংলাদেশি বংশদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক শামিমাকে ব্রিটিনে ফিরিয়ে আনা দেশের জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছিলেন। তবে ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট শামিমার ব্রিটেনে ফেরাকে রাষ্ট্রের জন্য হুমকি নয় বলে আজ অভিমত দিয়েছেন।
লন্ডনের এক স্কুল থেকে ২০১৫ সালে দুই বান্ধবীসহ পালিয়ে সিরিয়ায় গিয়ে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর (আইএস) সঙ্গে যোগ দেয়া বাংলাদেশি বশোদ্ভূত শামীমা বেগম এখন যুক্তরাজ্যে ফিরতে চাইলেও অতীত কর্মের জন্য পারছেন না। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ত্ব রোহিত করা হয়। শেষ পর্যন্ত তার ব্রিটেনে ফেরার আবেদনটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। খবর আরব নিউজের।
ব্রিটেনের সুপ্রিমকোর্ট মঙ্গলবার এক আদেশে জানিয়েছেন, ২১ বছর বয়সী শামিমা বেগম এখন আর জাতীয় নিরাপত্তার জন্য কোনো হুমকি নন। শামিমা বেগমের আইনজীবীরা ২০১৯ সাল থেকে এ আইনি লড়াই চালিয়ে আসছেন। এর আগে গত জুলাইয়েও আদালত শামিমার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন, কিন্তু দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকির কথা বলে তার নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে।শামিমার আইনজীবী ডেভিড পেননিক বলেন, সুপ্রিমকোর্টের এ আদেশের পর তার নাগরিকত্ব ফিরে পেতে আর কোনো বাধা থাকার কথা না।
উল্লেখ্য, মাত্র ১৫ বছর বয়সে যুক্তরাজ্য থেকে সিরিয়া পালিয়ে গিয়ে এক আইএস যুদ্ধাকে বিয়ে করেন শামিমা বেগম। সেখানে তার ৩টি সন্তান হলেও সবাই মারা যায়। সিরিয়ায় আইএসের পতন হলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ নারী যুক্তরাজ্যে ফিরতে চাইলে তার নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। তখন থেকেই আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন শামিমা। সিরিয়ায় যাওয়ার জন্য লন্ডন ত্যাগের সময় বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির ছাত্রী শামিমা বেগম ও আমিরা আবাসির বয়স ছিল ১৫, আর খাদিজা সুলতানরা বয়স ছিল ১৬।
লন্ডনের পাশে গ্যাটউইক বিমানবন্দর থেকে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তারা তিন জন তুরস্কের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন। তাঁরা তাঁদের বাবা-মাকে একসঙ্গে কোথাও বেড়াতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছিলেন। তুরস্কে অবতরণের পর তাঁরা সীমান্ত পেরিয়ে সিরিয়ায় প্রবেশ করেন। তখন সিরিয়া ও ইরাকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল আইএসের দখলে ছিল।
Leave a Reply