জামাল মিয়া,ভৈরব প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মোখলেছুর রহমান (২৫) নামে এক কাতার প্রবাসী নির্মাণ শ্রমিক পাথর চাপায় নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে কাতারের দোহার শহরে এঘটনা ঘটে। নিহত মোখলেছুর রহমান ভৈরবের শ্রীনগর ইউনিয়নের জাফরনগর গ্রামের নয়াহাটি এলাকার রহমত আলীর পুত্র বলে জানা গেছে। জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে কাতারের দোহার শহরে ড্রেন নির্মাণের কাজ করার সময় কমপক্ষে দশফুট উপর থেকে মোখলেছুরের মাথায় পাথর পরলে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় আহাম্মদ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোখলেছুরকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। কাতারে অবস্থানরত নিহত মোখলেছুরের মামাতো ভাই মোঃ দুলাল মিয়া বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের পরিবারকে ফোন করে মোখলেছুরের মৃত্যুর খবর জানান। তারপর থেকেই নিহত মোখলেছুরের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। ছেলেহারা মা রুবি বেগমের আহাজারি আর ছোটবোন তামান্নার ভাইহাড়ানোর কান্না যেন চারপাশ ভারি করে তুলেছে। এদিকে বিদেশে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বাবা রহমত আলী যেন নিজের কথা বলার শক্তিই হাড়িয়ে ফেলেছেন। কোনো সান্তনাতেই থামছে না স্বজনহাড়ানোর এই কান্না। পরিবার সুত্রে জানা যায়, পরিবারে দুই ভাই আর দুই বোনের মাঝে মোখলেছুর সবার বড়। অষ্টম শ্রেনী পাশের পর অভাবের সংসারে আর বই হাতে নেওয়া হয়নি মোখলেছুর রহমানের। আর তাই অভাবগ্রস্থ পরিবারের ভাগ্যের চাকা ঘুড়াতে বাবার ত্রিশ শতাংশ জমি বিক্রি করে সাড়ে পাচঁ লাখ টাকার বিনিময়ে গত দুই বছর আগে কাতারে পাড়ি জমান মোখলেছ। মোখলেছ বিদেশ যাবার পর থেকে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ ফিরে আসে পরিবারটিতে। বিদেশ থেকে মোখলেছুরের পাঠানো টাকায় ছোটভাই তানভীর গত সাত মাস আগে অর্থ উপার্জনের আশায় মালয়শিয়ায় পাড়ি জমান। এদিকে একইভাবে বোন তাছলিমাকে বিয়ে দেওয়া হয়। আর পরিবারের সবার ছোট তামান্না এখন অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। সবমিলিয়ে বেশ হাসিখুশিতেই দিন কাটছিল পিতা রহমত আলীর পরিবারের। কিন্তু ছেলের মৃত্যুর খবরে সবকছিুই যেন নিমিষেই আবার এলোমেলো হয়ে গেল। তবে বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে শেষবারের মতো হলেও হাড়ানো স্বজনকে কাছে পেতে চায় তার শোকাহত পরিবার। তাই নিহত মোখলেছুরের লাশ অনতিবিলম্বে দেশে আনার ব্যবস্থা করতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন মোখলেছুরের পরিবার।
Leave a Reply