মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে :: চক্ষু লজ্জার কারণে ত্রাণ নিতে আসতে পারছেন না অনেক মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন। এসএমএস করলেই সেই সব অভাবী মানুষের বাড়িতে গোপনে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল। ত্রাণ সহায়তা পেতে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের হটলাইনে এসএমএস পাঠিয়ে দিলেই তাৎক্ষণিক বাসায় পৌঁছে যায় খাদ্য সহায়তা। হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল ইসলামের নির্দেশনায় ইতিমধ্যে নবীগঞ্জ উপজেলার প্রায় ১ হাজারেরও বেশি নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো হয়েছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত হয়েছে।
এছাড়াও করোনার এই মহাদুর্যোগে দিন রাত মানুষের পাশে থেকে পুরো উপজেলায় সাড়া জাগিয়ে তুলছেন এই কর্মকর্তা। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করকে প্রতিদিনই ছুটে চলেছেন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গঞ্জে। জানা যায়, দেশে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সমস্যায় নিমজ্জিত পরিবারকে সহায়তা করতে হটলাইন সেবা চালু করেন হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক। হটলাইনে এসএমএস পাঠালে, জেলা প্রশাসনের হটলাইন থেকে নবীগঞ্জ উপজেলার আবেদনগুলো ফরওয়ার্ড করে পাঠিয়ে দেন নবীগঞ্জের ইউএনওর কাছে। ইউএনও বিশ্বজিত কুমার পাল আবেদনগুলো যাচাই বাচাই করে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করে একটি স্বেচ্ছাসেবী বিশেষ টিমের মাধ্যমে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেন আবেদনকারীর বাড়িতে।
জানা গেছে, ‘স্যার আমরা খুব কষ্টে আছি, খাবার পাচ্ছি না, আমার পরিবারের জন্য কিছু একটা করেন,’ তবে আমার বিষয়টি কাউকে জানিয়ে লজ্জায় ফেলবেন না’, ‘শিশু সন্তান নিয়ে আমরা না খেয়ে আছি, আমাদের কিছু সাহায্য করলে ভালো হয়।’ এরকম নানা এসএমএস আসছে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের হটলাইনে এবং উপজেলার নবীগঞ্জের ইউএনও’র মোবাইল ফোনে। প্রশাসনের ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকায় সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসিতও হচ্ছেন।
নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও গ্রামের এক গৃহবধূ বলেন, এতদিন কেউ তাদের খোঁজ নেননি। প্রশাসনের খাদ্যদ্রব্য পেয়ে তিনি খুবই খুশি। একই কথা বলেন, জনৈকা শেগুন বেগম। তিনি বলেন, স্বামী দিনমজুর। কয়েকদিন কাজ নেই। প্রায় অনাহারে দিন কাটছিল। পরিচিত একজনের মাধ্যমে ম্যাসেজ পাঠান। এরপর রাতে খাদ্য সামগ্রী পেয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার মাধ্যমে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। কেউ অনাহারে থাকবে না। মধ্যম শ্রেণির পরিবারের যারা লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার নিতে পারবেন না বা যারা চাইতে পারেন না তারাও হটলাইন নম্বর চালুর পর অনেকে সাহায্যের জন্য এসএমএম পাঠান, আমরা যাচাই-বাছাই করে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেই।
ত্রাণের জন্য যেভাবে এসএমএস পাঠাবেন:: এসএমএস করার সময় অবশ্যই নিচে উল্লিখিত তথ্যগুলো প্রদান করবেন। ১. নাম ২. মোবাইল নাম্বার ৩. উপজেলা উল্লেখ করে পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা ৪. জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ৫. পেশা ৬. কোন সরকারি সহায়তা ইতোমধ্যে পেয়েছেন কি না। এসব তথ্য দিয়ে নিচের যে কোন নম্বরে এসএমএস পাঠাতে পারেন।: 01766119600, 01779976706, 01721047467, 01716402148।
এই নম্বরগুলোতে হবিগঞ্জ জেলার বাসিন্দা ছাড়া অন্য জেলার কেউ টেক্সট পাঠাবেন না।
Leave a Reply