হাসপাতালে ঠাঁই না মেলায় পরিত্যক্ত ঘরে সন্তান প্রসব

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা ঃ গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ঠাঁই না মেলায় গভীররাতে পরিত্যক্ত ঘরে জেমি বেগম নামে এক প্রসূতি সন্তান প্রসব করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বুধবার (১২ আগস্ট) বিকেলে গাইবান্ধা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ঘটনাটি তদন্তের জন্য জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কনসালট্যান্ট ডা. ফারুক আজম নূরকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর দু’জন হলেন গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের ডা. মাহাবুবর রহমান ও ডা. রেদওয়ানুল ইসলাম। কমিটিকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, এর আগে মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) দিনগত গভীর রাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে দেওয়ায় শহরের ডিবি রোডের পরিত্যক্ত একটি ঘরে সন্তান প্রসব করেন জেমি বেগম।

তিনি সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়ার আব্দুর রহিম মিয়ার স্ত্রী।

পরে গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশ অসুস্থ অবস্থায় প্রসূতি মা ও নবজাতক শিশুকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

জেমির স্বজন ও পুলিশ জানায়, রাতে জেমি প্রসব বেদনা নিয়ে সিনএনজি চালিত অটোরিকশায় করে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে আসেন। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক উপস্থিত না থাকায় কেন্দ্রের পরিদর্শিকা সেলিনা আক্তার তাকে ভর্তি না করিয়ে তাদের অন্যত্র যেতে বলেন। নিরুপায় প্রসূতির স্বজনরা অনেক কাকুতি-মিনতি করলেও তাতে কর্ণপাত করেননি কেন্দ্রে থাকা পরিদর্শিকা, স্বাস্থ্য কর্মী ও আয়ারা। একপর্যায়ে জেমিকে নিয়ে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পথে তার প্রসব বেদনা তীব্র হলে তাকে জেলা শহরের ডিবি রোডের পরিত্যক্ত একটি ঘরে নিয়ে যান স্বজনরা। সেখানেই একটি মেয়ে সন্তান প্রসব করেন তিনি। পরে স্থানীয় জনগণ ও পুলিশের সহযোগিতায় অসুস্থ (প্রসবজনিত) অবস্থায় মা ও নবজাতককে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

এ ব্যাপারে মাতৃসদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. আফসারী খানম জানান, মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র সবার জন্য উন্মুক্ত। রাতের যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা হলো রোগীকে রেফার্ড করা হয়। সেই রোগী হাসপাতালে যাওয়ার পথে সন্তান প্রসব করেন। এতে যদি কর্তব্যে অবহেলার কোনো বিষয় থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে গভীররাতে নবজাতক ও প্রসূতিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার সেবার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা