লন্ডন থেকে, মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া: ডেনমার্ক ও নরওয়েতে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন প্রয়োগ সাময়িক ভাবে বন্ধ করা হয়েছে। ডেনমার্কে কয়েকজন ভ্যাকসিন গ্রহীতার রক্তে জমাট বাঁধা ও একজনের মৃত্যুর পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ সংস্থা জোর দিয়ে বলে আসছে ভ্যাকসিন নেওয়ার কারণে রক্ত জমাট বাঁধার কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। সংস্থাটি বলছে, সাধারণ জনগণের তুলনায় ভ্যাকসিন গ্রহীতার সংখ্যা বেশি নয়। কিন্তু বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ ভ্যাকসিনটির দুটি ব্যাচের প্রয়োগ বাতিল করেছে।
এই সপ্তাহে অস্ট্রিয়া অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের একটি ব্যাচ প্রয়োগ বাতিল করে। ভ্যাকসিন নেওয়ার দশ দিনের মাথায় এক নারীর মৃত্যুর পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অস্ট্রিয়ার এই ব্যাচটি ইউরোপের ১৭টি দেশে পাঠানো এবিভি৫৩০০ নামের ব্যাচের ১০ লাখ ডোজের অংশ। এস্টোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও লুক্সেমবার্গও ওই ব্যাচটি প্রয়োগ বাতিল করেছে।
ডেনমার্কে মৃত্যু হওয়া ব্যক্তির বিস্তারিত জানানো হয়নি। তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে তারা ১৪ দিন ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ স্থগিত রাখছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনের সঙ্গে মৃত্যুর কোনও সম্পর্ক এখনও পাওয়া যায়নি। কিন্তু আমাদের সময়মতো ও সতর্ক হিসেবে পদক্ষেপ নিতে হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে।
নরওয়ের সরকারি স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট জানিয়েছে, ডেনমার্কের মতোই তারা ভ্যাকসিনের প্রয়োগ স্থগিত রাখবে। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথের গেই বুখলম বলেন, ভ্যাকসিন ও রক্তের জমাট বাঁধার বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি।
আইসল্যান্ডের শীর্ষ এপিডেমিওলজিস্ট জানিয়েছেন, তারাও সতর্ক পদক্ষেপ হিসেবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ স্থগিত করতে যাচ্ছেন।
ইতালির আইফা মেডিসিন্স এজেন্সি ঘোষণা দিয়েছে, অস্ট্রিয়ার ব্যাচ থেকে ভিন্ন আরেকটি ব্যাচ এবিভি২৮৫৬ –এর ভ্যাকসিন ডোজ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশটির সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সিসিলি শহরে ৪৩ বছর বয়সী এক সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়েছে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণে। এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিনের সঙ্গে মৃত্যুর কোনও যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলছে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ভ্যাকসিনর সুরক্ষার বিষয়টি গভীরভাবে গবেষণা করা হয়েছে। কোম্পানির এক মুখপাত্র বলেন, রোগীর সুরক্ষাকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেয়। ওষুধ নিয়ন্ত্রকরা ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা মান মেনেই ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পিয়ার রিভিউ করা তথ্যেও দেখা গেছে সাধারণভাবে শরীরের জন্য ভালো সহিষ্ণু।
যুক্তরাজ্যের মেডিসিন্স অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টর রেগুলেটরি এজেন্সি জানায়, ভ্যাকসিন সমস্যা তৈরি করছে এমন কোনও প্রমাণ নেই। মানুষের উচিত ভ্যাকসিন নেওয়া।
সংস্থাটির ফিল ব্রায়ান বলেন, রক্তে জমাট বাঁধা স্বাভাবিকভাবেই হতে পারে এবং এটি অস্বাভাবিক না। যুক্তরাজ্যজুড়ে ১ কোটির বেশি মানুষ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
Leave a Reply