নোয়াখালী থেকে নবীন::নোয়াখালীতে গণধর্ষণ এর ঘটনায় ভিকটিমকে আজ দেখতে হাসপাতালে এসেছেন বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য জোটের প্রতিনিধি দল। ঘটনার মূল পরিকল্পনকারী বুলু ও জসিম সহ এ নিয়ে ৭জন গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, ধর্ষনের আলামত পাওয়া গেছে ।
পুলিশ সুপার (এসপি) মো: ইলিয়াছ শরীফ জানান, শুক্রবার দুপুর একটার দিকে চট্টগ্রামের ডাবলমুরিং থানার পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে হাসান আলী বুলুকে চরজব্বার থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এসপি আরো জানান, এই বুলুই ১০ হাজার টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটায় বলে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে। এর আগে ভোটের দিন বুলুর সাথে ভুক্তভোগী নারীর কথা কটাকাটি হলে বুলু তাকে হুমকি দেয় বলেও জানান তিনি। বুলু সাবেক ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা রুহুল আমিনে ব্যক্তিগত সহকারী।
এর আগে আজ ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে চট্টগ্রামের নাজিরহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার আরেক আসামী জসিম উদ্দিনকে (৩০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জসিম সুবর্ণচরের চরজুবলী ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামের মোতাহের হোসেনের ছেলে। জসিম পেশায় কলা বিক্রেতা। ঘটনার পর সে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। মামলার তদন্তে ঘটনার সাথে জসিমের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ। প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে রাতেই চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে অভিযানে নামে চরজব্বার থানা পুলিশের একটি টিম।
এনিয়ে এই মামলায় মোট সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। তাদের মধ্যে একজন সাবেক ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামীরীগ নেতা। চারজন ইটভাটা শ্রমিক একজন ইটভাটার মাঝি। মামলার অপর আসামীদেরকে ধরার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি। এই মামলায় দ্রুত চার্জশীট দাখিল করা হবে বলে জানান এসপি।
এদিকে ভুক্তভোগী দেখতে শুক্রবার দুপরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে যান বাংলাদেশের কমিনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হুহিন হোসেন প্রিন্সের নেতৃত্বে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের সবাইকে গ্রেপ্তার ও দ্রুত আইনে মামলা নিষ্পত্তির দাবি জানান। এ ঘটনাকে রাজনৈতিক ভাবে না দেখে অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে বিচার করতে হবে। নির্বাচনের নামে ক্ষমতা দখলের যে মহোৎসব হয়েছে তা কারো জন্য শুভ নয় । প্রতিনিধি দলের সাথে ছিলেন বজলুর রশিদ, আকবর খান, আবদুস সাত্তার ও মাইন উদ্দিন চৌধুরী লিটন।
পুলিশ জানিয়েছে, গত রোববার রাতে চরজুবলী ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামের সোহেল, হানিফ, স্বপন, চৌধুরী, বেচু, বাসু, আবুল, মোশারেফ ও ছালাউদ্দিন ৪০ বছর বয়সী এক নারীর বসত ঘর ভাংচুর করে। এক পর্যায়ে তারা ওই নারীরর স্বামী ও মেয়েকে বেঁধে রেখে তাকে ঘরের বাইরে নিয়ে গণধর্ষণ করে ও পিটিয়ে আহত করে। পরদিন ওই নারী ও তাঁর স্বামীকে ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী ৯ জনকে আসামি করে চরজব্বার থানায় মামলা দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগীর ডাক্তারী পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেয় মেডিকেল বোর্ড। এ দিকে বিকেলে নোয়াখালী -৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীর পক্ষ থেকে এক প্রতিনিধি দল ভিকটিমকে দেখতে যান। ভিকটিমকে সংসদ সদস্যর পক্ষ থেকে নগদ অর্থ প্রদান করা হয় এবং তার যাবতীয় চিকিৎসা ব্যায় ভার , পরিবারের পুনর্বাসনের দায়িত্ব ও সকল আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ^াস দেন।
Leave a Reply