হবিগঞ্জ প্রতিনিধি::হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মোশারফ নামে এক গাড়ি চালকের লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। গাড়ি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই তাকে হত্যা করেছে ঘাতকরা। আদালতে স্বীকারোক্তিতে তারা এমন তথ্যই জানিয়েছে। এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত প্রধান দুই হত্যাকারীকে ঢাকা ও বরিশাল থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপর গ্রেফতারকৃত হত্যাকান্ডের অন্যতম আসামী সালাউদ্দিন মীর মিলন বুধবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান আলম প্রধানের আধালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে ঘটনার আদ্যোপান্ত বর্ণনা করে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জ পিবিআইর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিয়া কুতুবুর রহমান চৌধুরী। বুধবার রাতে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আসামী মিলনের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে তিনি জানান, ২০১৮ সালের ২৭ মে ঢাকা থেকে ইউনিক গাড়িতে করে সিলেটে এসে জাফলং যাওয়ার জন্য মোশারফ নামে এক গাড়ি চালকের প্রাইভেট কার ভাড়া নেয় তিন দুর্বৃত্ত। সেখানে ঘুরে তারা সিলেট শহরে ফিরে যায়। পরে সেখান থেকে বিয়ার কিনে এর সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে কৌশলে গাড়ি চালককে পান করিয়ে অচেতন করে। আসামী শামীম চালক মোশারফকে গাড়িতে নিয়ে নিজেই প্রাইভেট কার চালিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পথে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার রুপশংকর এলাকায় চালককে গলায় গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মহাসড়কের পাশে লাশ ফেলে প্রাইভেট কার নিয়ে চলে যায়। গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় নরসিংদী এলাকায় পুলিশ চেক পোস্টের ভয়ে গাড়ি রেখে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। এদিকে বাহুবল থানা পুলিশ ২০১৮ সালের ২৮ মে লাশ উদ্ধার করলে স্থানীয় গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিহত মোশারফের পরিবার দেখতে পেয়ে বাহুবল থানায় এসে লাশ সনাক্ত করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গাড়ির মালিক কামাল আহমেদ বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
হবিগঞ্জ পিবিআইর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিয়া কুতুবুর রহমান চৌধুরী জানান, মামলাটি থানা পুলিশ প্রথমে তদন্ত শুরু করে। পরে এটি হবিগঞ্জ পিবিআইতে স্থানান্তরিত করা হয়। পিবিআই’র পরিদর্শক মো. ফরিদুল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তিতে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত ও গাড়িতে রক্ষিত একটি কেস স্লিপের সূত্র ধরে আসামীদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়। পরে বিভিন্ন কৌশল ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।
হবিগঞ্জ পিবিআইর পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ঢাকার হাজারীবাগ এলাকা থেকে মো. শামীম ফকির (৪০) নামে একজনকে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে আটক করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওইদিন রাতে বরিশালের উজিরপুর এলাকা থেকে সালাউদ্দিন মীর মিলন (২৯) নামে আরও একজনকে আটক করা হয়েছে।
Leave a Reply