কানাইঘাট প্রতিনিধি:কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় ৯ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা অনুপস্থিত থাকায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদ হলরুমে নির্ধারিত মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানার তত্বাবধানে দুপুর ১২ টায় সভা শুরু হলেও সভায় বিভিন্ন দপ্তরের সরকারী কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকলেও কোন ইউপি চেয়ারম্যান সভায় উপস্থিত হননি। সভায় চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিত থাকার সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে চাউর হলে জনমনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে সভায় অনুপস্থিতির কারন জানতে চাইলে তাদের পক্ষে চেয়ারম্যান সমিতি কানাইঘাট উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক বানীগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান মাসুদ আহমদ জানান, গত ৪ জুন রাজাগঞ্জ ইউপির কয়েকটি ওর্য়াডের ভিজিএফ’র চাল বিতরনের সময় নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় একটি চক্র ভিজিএফ’র ৪৫ বস্তা চাল আটক করে। এ ঘটনায় সম্পূর্ণ নিরাপরাধ রাজাগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানা মামলা দায়ের করা হলে ৯ ইউনিয়ন চেয়ারম্যানবৃন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরীর কাছে এব্যাপারে পরিষদে জরুরী বৈঠক ও তদন্ত কমিটি গঠনের দাবী জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান তাদের দাবীর প্রতি কোন ধরনের কর্নপাত না করার কারনে তারা পরিষদের সমন্বয় সভায় যোগদান করেননি বলে তিনি জানান। তবে নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান মুমিন চৌধুরীর প্রথম উপজেলা পরিষদে নির্ধারিত মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতির ঘটনা এই প্রথম বলে জানা গেছে। এ দিকে উপজেলা সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতির বিষয়টি জানতে চাইলে নিজ কার্যালয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে চেয়ারম্যান মুমিন চৌধুরী বলেন, রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের ভিজিএফ’র চাল আটক নিয়ে তিনি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। তারপরও আমার পরিষদের চেয়ারম্যানরা সমন্বয় কমিটির সভায় যদি এ কারনে অনুপস্থিতি হয়ে থাকেন তাহলে ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। চেয়ারম্যানরা সভায় উপস্থিত না হওয়ায় তিনি সভার শুরুতে ঝিঙ্গাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিনের সাথে ফোনে কথা বলতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বড়চতুল ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জরুরী কাজে ব্যস্ত থাকায় সভায় উপস্থিত হতে পারেনি বলে জানান। চাল আটক নিয়ে চেয়ারম্যান মুমিন চৌধুরী তার ভূমিকা নিরপেক্ষ দাবী করে বলেন এব্যাপারে মামলা প্রশাসনিক ভাবে হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ হাফিজ মজুমদার সহ সবাই জানেন। চাল আটক নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যারা অপরাধী হবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন যেন করা হয় এজন্য সিলেটের জেলা প্রশাসকের সাথে এমপি মজমুদার কথা বলছেন। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে আমাদের সবাইকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। চেয়ারম্যানবৃন্দরা ভিজিএফ’র চাল আটক নিয়ে আমার সাথে সে সময় কথা বলে ছিলেন। তারা পরিষদের জরুরী সভা ও তদন্ত কমিটি গঠনের দাবী জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু চাল আটক নিয়ে মামলা হওয়ায় আমি সহ নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানার এ বিষয়ে কোন করনীয় ছিল না বিধায় জরুরী সভার আহ্বান করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানরা আমার উপর অসন্তুষ্ট হয়ে থাকলে তাদের নিয়ে পরবর্তীতে বসে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সব কিছুর সমাধান করা হবে। এ নিয়ে যারা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে তাদের ব্যাপারে সবাই কে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি। দূর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে তিনি সব সময় সোচ্ছার থাকবেন বলে চেয়ারম্যান মুমিন চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন। নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা জানান চেয়ারম্যানবৃন্দরা উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় নির্ধারিত সময় উপস্থিত না হওয়ায় তিনি এব্যাপারে লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির বয়োজৈষ্ঠ চেয়ারম্যান জেমসলিও ফারগুশন নানকা সাথে ফোনে কথা বলেছেন। তিনি অসুস্থ্য থাকার কারনে সভায় উপস্থিত হতে পারেননি। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল্লাহ শাকির বলেন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা পরিষদের মাসিক সভায় উপস্থিত না হওয়ায় তিনি কয়েকজন চেয়ারম্যানদের সাথে কথা বলেছেন। শীঘ্রই এ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মুমিন চৌধুরীর উপস্থিতিতে বৈঠক বসে ভুল বুঝাবুঝির অবসান করা হবে।
Leave a Reply