বাগেরহাট প্রতিনিধি::স্বামী কর্তৃক গৃহবধু ভারতে পাচার হওয়ার ৯ মাস পর বাগেরহাটের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) উদ্ধার করেছে। বেনাপোল সীমান্ত পুলিশের সহায়তায় বাগেরহাট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাসান মাসুদসহ সদস্যরা উদ্ধার করে বাগেরহাটে নিয়ে আসে। উদ্ধার হওয়া গৃহবধুকে বৃহস্পতিবার ১৬৪ ধারায় জবান বন্দি গ্রহনের জন্য আদালতে প্রেরনের প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মেয়ে খুজে না পেয়ে ওই গৃহবধুর মা বাদী হয়ে মানব পাঁচার প্রতিরোধ দমন আইনে বাগেরহাট আদালতে একটি মামলা করলে আদালত আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে বুধবার বেনাপোল সীমান্ত থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
উদ্ধার হওয়া গৃহবধু বলেন, ২০১৭ সালের ১লা এপ্রিল আরিফের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আরিফ আমাকে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করত। আরিফের মা-বাবা আরিফের সাথে ভারত যেয়ে কাজ করে খেতে বলে। এসবের মধ্যে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের দিকে কৌশলে আরিফ আমাকে নিয়ে ভারতে চলে যায়। পরে বোম্বে একটি ফ্লাটে রাখে আরিফ আমাকে। সেখানে তিনটি মেয়ে ছিল। তিনদিন সেখানে থাকার পরে পাশের একটি ফ্লাটে নিয়ে যায়। সেই ফ্লাটে মাঝে মাঝে আরিফের বন্ধুরা আস এবং আমাকে নির্যাতন করত। ওই ফ্লাটে দুই মাস থাকার পরে, বোম্বে পুলিশ আমাকে থানায় নিয়ে যায়। তখন আরিফ ছিল না। সেখান থেকে নবজীবন নামের একটি এনজিও-র কাছে আমাকে হস্তান্তর করে পুলিশ। সেখানে আটমাস থাকার পরে জাস্টিস এ্যান্ড কেয়ার বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা আমাকে নবজীবন এনজিও-র কাছ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। তাদের কাছ থেকে পিবিআই আমাকে নিয়ে আসে।
উদ্ধার মেয়েটির বিধবা মা বলেন, অনেকদিন পরে মেয়েকে কাছে পেয়ে আমরা খুব খুশি হয়েছি। এখন আইনি প্রক্রিয়া শেষে মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে যেতে চাই। বিয়ে করে স্ত্রীকে যে পুরুষ পাঁচার করতে পারে, আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বাগেরহাট পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরা পাঁচার হওয়া মেয়েটির বিষয়ে তদন্ত শুরু করি। একপর্যায়ে আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই। আদালতে ১৬৪ ধারার ওই মেয়েটির জবানবন্দী গ্রহনের প্রস্তুতি চলছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply