চলন্ত বাসে তরুণী ধর্ষণ মামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মূলহোতা হেলপার লিটন গ্রেফতার

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় চলন্ত বাসে তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামী ধর্ষণের ঘটনার মূলহোতা বাসের হেলপার লিটন মিয়া (২৬) কে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে র‌্যাব-৯, সিলেট সদর কোম্পানি গঞ্জ ও শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্পের যৌথ আভিযানে সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা থানাধীন জালালপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

র‌্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে. এম. শহিদুল ইসলাম সোহাগ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। র‌্যাবের অভিযানে গ্রেফতার হওয়া বাসের হেলপার লিটন মিয়া (২৬) সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রশিদপুর গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে। এরআগে গ্রেফতার হওয়া বাস চালক সাব্বির মিয়া (২৭) নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের এনাতাবাদ গ্রামের ফকির আলীর ছেলে।

নবীগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী তরুণী বানিয়াচং উপজেলার বাসিন্দা হলেও বর্তমানে ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। রোববার ঢাকা থেকে দাদার বাড়ি হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে যাওয়ার জন্য বিলাশ পরিবহণের একটি বাসে ওঠে ঘুমিয়ে পড়েন ওই তরুণী। বাস থেকে শায়েস্তাগঞ্জ নামার কথা থাকলেও ঘুমন্ত অবস্থায় থাকায় বাসটি সিলেটে চলে যায়। পরে সিলেট থেকে নবীগঞ্জ হয়ে বানিয়াচং যাওয়ার জন্য সিলেট থেকে ‘মা এন্টারপ্রাইজ’ নামক একটি বাসে উঠে ওই তরুণী। বাসটি বিভিন্ন স্টপেজ থেকে যাত্রী উঠানো-নামানোর সময় ধীরে ধীরে ফাঁকা হয়ে পড়ে। শেরপুর এলাকায় পৌঁছার পর অন্যান্য যাত্রীরা নেমে গেলে বাসে ওই তরুণী একা হয়ে পড়েন। তখন একা পেয়ে প্রথমে বাসের হেলপার ও পরে চালক তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে আউশকান্দি এলাকায় পৌঁছালে তরুণীর চিৎকারে স্থানীয়রা সেনাবাহিনী ও পুলিশকে খবর দেন। রাত ১২টার দিকে নবীগঞ্জ-আউশকান্দি সড়কের ছালামতপুর এলাকায় স্থানীয়রা বাসচালককে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করেন এবং তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। তবে কৌশলে হেলপার পালিয়ে যায়। সোমবার সকালে তরুণী নিজেই নবীগঞ্জ থানায় সাব্বিরকে প্রধান ও লিটনকে ২য় আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পরে ওই তরুণীকে চিকিৎসার জন্য হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিন সকালে ঘটনাস্থল নবীগঞ্জের ছালামতপুর এলাকা পরিদর্শন করে ও থানায় গ্রেফতারকৃত আসামীর সঙ্গে কথা বলেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এ.এন.এম সাজেদুর রহমান। পরে পুলিশ সুপার হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে দেখা করেন এবং সর্বাত্মক সহযোগীতার আশ্বাস দেন। ঘটনার পর পর সটকে পড়েন ধর্ষণকা-ের মূলহোতা হেলপার লিটন। গ্রেফতার এড়াতে লিটন আত্মগোপনে চলে যায়। অন্যদিকে লিটনকে গ্রেফতার করতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৯, সিলেট এর সদর কোম্পানী এবং সিপিসি-৩ হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্প এর যৌথ আভিযানিক দল সিলেট জেলার দক্ষিন সুরমা থানাধীন জালালপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় চলন্ত বাসে তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনার ২৪ ঘন্টার ভিতরে দায়েরকৃত মামলার আসামী ধর্ষণকা-ের মূলহোতা বাসের হেলপার লিটন মিয়াকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা