শিশুর দাঁতের যত্ন: সুস্থ ও সুন্দর দাঁতের জন্য জরুরি পরামর্শ

ডেস্ক রিপোর্ট;

শিশুর দাঁতের যত্ন: সুস্থ ও সুন্দর দাঁতের জন্য জরুরি পরামর্শ

শিশুর দাঁতের যত্ন ছোটবেলা থেকেই নেওয়া উচিত, কারণ এটি ভবিষ্যতে তাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। অনেক অভিভাবক মনে করেন যে দুধের দাঁত পড়ে যাবে, তাই এর যত্ন নেওয়া অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু এই ধারণা সঠিক নয়। দুধের দাঁতই স্থায়ী দাঁতের ভিত্তি তৈরি করে এবং সঠিকভাবে যত্ন না নিলে পরবর্তী সময়ে দাঁতের সমস্যা হতে পারে।

নিচে শিশুর দাঁতের যত্নের গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক তুলে ধরা হলো—

১. দাঁত ওঠার পর থেকেই যত্ন শুরু করুন

শিশুর প্রথম দাঁত ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার করা শুরু করতে হবে। নরম ব্রাশ ও ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করে দিনে অন্তত দুবার দাঁত ব্রাশ করানো উচিত। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে খুব অল্প পরিমাণ টুথপেস্ট (এক দানার সমান) ব্যবহার করাই যথেষ্ট।

২. শুয়ে শুয়ে দুধ খাওয়ানো এড়ান

অনেক শিশুই ঘুমের আগে বা রাতে শুয়ে দুধ পান করে, যা দাঁতের ক্ষতির অন্যতম কারণ। দুধে থাকা প্রাকৃতিক চিনি দীর্ঘক্ষণ মুখে থাকলে তা দাঁতের ক্ষয় সৃষ্টি করতে পারে। তাই শিশুকে শোয়ানো অবস্থায় বোতল বা স্তন্যপান করানো এড়িয়ে চলা উচিত এবং খাওয়ার পর মুখ পরিষ্কার করা জরুরি।

৩. মিষ্টিজাতীয় খাবার কম দিন

চকলেট, ক্যান্ডি, আইসক্রিম বা মিষ্টি পানীয় শিশুদের খুব পছন্দ হলেও এগুলো দাঁতের ক্ষতির অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত চিনি দাঁতে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটায় এবং ক্যাভিটি তৈরি করতে পারে। শিশুর দাঁত সুস্থ রাখতে হলে মিষ্টিজাতীয় খাবার নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে দিতে হবে এবং সেগুলো খাওয়ার পর দাঁত পরিষ্কার করতে হবে।

৪. পানি পান করানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন

শিশুকে বেশি বেশি পানি পান করানোর অভ্যাস করানো দরকার। বিশেষ করে খাবার বা দুধ পান করার পর পানি খাওয়ালে মুখ পরিষ্কার থাকে এবং দাঁতের ফাঁকে খাবারের অংশ আটকে থাকার সম্ভাবনা কমে যায়।

৫. দাঁত ব্রাশের পাশাপাশি ফ্লস করার অভ্যাস গড়ে তুলুন

বাচ্চাদের দাঁতের ফাঁকে খাবার আটকে গেলে তা ধীরে ধীরে প্লাক তৈরি করতে পারে। তাই বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের দাঁতের ফাঁক পরিষ্কারের জন্য ফ্লসিং শেখানো জরুরি।

৬. দাঁতের ডাক্তার দেখানো জরুরি

প্রতি ছয় মাস অন্তর শিশুকে ডেন্টিস্টের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত। অনেক সময় দাঁতের ক্ষতি বা দাঁতের গঠনে সমস্যা থাকলেও তা চোখে পড়ে না। নিয়মিত দাঁতের পরীক্ষা করালে সমস্যা আগে থেকে ধরা পড়বে এবং চিকিৎসা নেওয়া সহজ হবে।

৭. স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন

শিশুর দাঁত ও হাড় মজবুত রাখতে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো জরুরি। দুধ, ডিম, শাকসবজি, বাদাম এবং ফলমূল দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।

উপসংহার

শিশুর দাঁতের সুস্থতা নিশ্চিত করতে হলে ছোটবেলা থেকেই সঠিক অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, মিষ্টি জাতীয় খাবার কম খাওয়া ও দাঁতের ডাক্তার দেখানোর মাধ্যমে শিশুর সুন্দর ও মজবুত দাঁতের ভিত্তি তৈরি করা সম্ভব। শিশুর হাসি সুন্দর রাখতে এখন থেকেই যত্ন নেওয়া শুরু করুন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা