ভৈরবের জোয়ানশাহী হাওরে ২১ হাজার মেট্রিকটন বোরো ধান। সঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে কৃষক

জামাল মিয়া, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ ) প্রতিনিিিধ ॥হুমকির মুখে ভৈররেব জোয়ানশাহী হাওরের সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর ধানী জমি। যেকোন সময় তলিয়ে যেতে পারে এ এলাকার ২১ হাজার মেট্রিকটন বোরো ধান। আর এখানকার একমাত্র বড় হাওরটি মেঘনার কোল ঘেঁষা হওয়ায় বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় সময় পার করছেন কৃষকরা।

এরই মধ্যে কিছু ধানী জমি তলিয়ে গেছে। ওরার খালে অস্থায়ীভাবে বাধ নির্মাণ করে দিলেও, স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজন একটি স্লুইসগেইট নির্মাণের। এলাকার কৃষকদের বাঁচাতে এবং বিপুল পরিমাণ ফসল রক্ষায় অবিলম্বে একটি স্লুইস গেইট নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন এলাকার কৃষক ও কৃষি বিভাগ ।

ভৈরব উপজেলার আগানগর, শ্রীনগর আর সাদেকপুর ৩ ইউনিয়নের চার হাজার হেক্টর আয়তনের জোয়ানশাহী হাওর। যার প্রায় পুরোটাতে আবাদ হয় বোরো ধান। এখন হাওরজুড়ে মৃদু বাতাসে দুলছে ধানের শিষ। আর কিছুদিন পর থেকেই সে ধান কাটা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু বাঁধ সেধেছে প্রমত্তা মেঘনা সংযুক্ত ওরারখাল নামের জোয়ানশাহী হাওরের ওই খালটি।

৪ কিলোমিটার লম্বা ওরারখাল দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা পানি ওই খাল দিয়ে হাওরে ঢুকে ধান তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে। ইতোমেধ্যে খালের মুখে মাটি ফেলে অস্থায়ী বাধ নির্মান করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হবে কি না, চরম উৎকণ্ঠায় প্রতিটি মূহুর্ত কাটছে কৃষকদের । তা ছাড়া বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে প্রতিনিয়ত পানি ঢুকছে হাওরে।

হাওরটি যেকোন মহুর্তে ডুবে যাওয়ার ভয়ে কৃষকরা আধা পাকা ধান ঘরে তুলছে। কৃষকরা জানান প্রতিবছর মেঘনার পানি খাল দিয়ে ঢুকে হাওরের ফসল নষ্ট হয় । কয়েক লাখ হেক্টও জমির ধান নষ্ট হয় । আর প্রতিবছরই প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্লুইসগেট নির্মাণের আশ্বাস দেওয়া হয় । কিন্ত স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়না । স্লুইস গেট নির্মাণ না করার ফলে পানিতে ডুবে ফসল নষ্ট হয় । পরের বছর আবারো ধার-দেনা করে ফসল ফলায় । ধান কাটার সময় হলে হানা দেয় মেঘনার পানি । তলিয়ে যায় কয়েক লাখ মণ ধান । এভাবে পানির সাথে সংগ্রাম করে ফসল রক্ষার চেষ্টা করা হয় ।
এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষক মোশারফ সিকদার,মঞ্জুর আলী,জামাল মিয়া,ফারুক মিয়া,বধূ মিয়া আবু বক্কও সিদ্দিকসহ অনেক কৃষকরা অভিযোগ করে ক্ষোভের সাথে বলেন প্রতিবছর স্থানীয় প্রশাসন এসে ওরার খাল পরিদর্শন করে স্থায়ী বাধঁ সহ স্লুইসগেইট নির্মাণের আশ্বাস দেন কিন্ত বাস্তবায়ন করেন না । আমরা আশ্বাস চাইনা বাস্তবায়ন চাই । স্লুইস গেট নির্মাণ না হওয়ায় প্রতিবছর মেঘনার পানি ওরার খাল দিয়ে ঢুকে কয়েক লাখ মণ ধান পানিতে ডুবে নষ্ট হয় । এভাবে যুগ যুগ ধরে এ হাওরের ফসল নষ্ট হয়ে আমরা কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি ।

এ বিষয়ে শ্রী-নগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সার্জেন্ট (অবঃ) আবু তাহের মিয়া জানান এ স্লুইসগেঁটি নির্মাণ হলে ৩ টি ইউনিয়নের ৪ হাজার হেক্টর জমির কয়েক লাখ মণ ধান রক্ষা পাবে । এ বাধঁ নির্মাণ ও স্লুইসগেট নির্মাণের দাবী কয়েক বছরের ।

এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জালাল উদ্দিন জানান ৩টি ইউনিয়নের ৪ হাজার হেক্টর জমির ধান রক্ষায় ওরার খালে একটি অস্থায়ী বাধঁ নিমার্ণ করা হয়েছে । আশা করছি আগামী বছওে একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করে স্থায়ী বাধ নিমার্ণ করা হবে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা