নবীগঞ্জে সিএনজি স্ট্যান্ড দখল নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত অর্ধশতাধিক

বুলবুল আহমেদ :: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড এলাকায় টমটম ও সিএনজি ভাড়া নিয়ে বিরোধের জেরে দুই ইউনিয়নের চার গ্রামের লোকদের মধ্যে  ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন নিহত এবং অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনীসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড এলাকার  দীঘলবাক ইউনিয়নের জামারগাঁও–রাধাপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ফয়সল আহমদের সঙ্গে পাশ্ববর্তী ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের কাকুড়া ও করিমপুর গ্রামের টমটম চালক রাশেদ ও সিএনজি চালক মোহাম্মদ আলী এবং সিরাজুল ইসলামের মধ্যে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এর জের ধরে গতকাল মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে দুই গ্রামের মানুষ মাইকিং করে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিয়ে কাকুড়া এলাকায় চৌরাস্তা নামক স্থানে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে রাধাপুর ও করিমপুর গ্রামের শত শত মানুষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে নারী পুরুষসহ অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হন। এর মধ্যে ২০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষে জামারগাঁও ও রাধাপুর গ্রামের লোকজন টিকতে না পিছু হটেন। এসময় রাধাপুর গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে সাব্বির মিয়া (৩৫) সংঘর্ষ চলাকালে একা পড়ে যান।  প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে সংঘর্ষে অংশ নিতে আসা একটি ট্রাক তার ওপর দিয়ে গেলে তার দুই পা থেঁতলে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
স্থানীয়রা জানান, বিবিয়ানা চৌরাস্তার টমটম ও সিএনজি চলাচল নিয়ে কাকুড়া-করিমপুর ও রাধাপুর,জামারগাঁও গ্রামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। কাকুড়া গ্রামের নেতৃত্বে ছিলেন মাখন মিয়া ও ইলিয়াছ মিয়া, অপরদিকে রাধাপুর–জামারগাঁও গ্রামের পক্ষের নেতৃত্ব দেন সাবেক মেম্বার আব্দুল বারিক রনি ও ফখরুল ইসলাম।
সাবেক মেম্বার ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, কাকুড়া গ্রামের লোকজন গত কয়েকদিন ধরে আমাদের গ্রামের মানুষকে পেলে মারপিট করছে। গতকাল রাতেও ব্যবসায়ী ফয়সল আহমদকে মারধর করে টাকা লুট করেছে। আজকে আমাদের কৃষক সাব্বিরকে একা পেয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।
অন্যদিকে কাকুড়া গ্রামের মাখন মিয়া মোবাইল ফোনে জানান, “রাধাপুর ও জামারগাঁও গ্রামের লোকজন আমাদের চালক রাশেদ ও মোহাম্মদ আলীকে মারপিট করেছে। আজ সকালে তারা আমাদের গ্রামে লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ করায় সংঘর্ষ হয়েছে।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনীসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা