পতাকা বৈঠকের পর কানাইঘাটের দুই যুবকের মরদেহ হস্তান্তর করল বিএসএফ

কানাইঘাট প্রতিনিধি : বাংলাদেশ বডার গার্ড বিজিবি ও ভারতের সীমান্ত রক্ষী বিএসএফ এর পতাকা বৈঠকের পর দুই বাংলাদেশি যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ গতকাল শুক্রবার বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। গত বুধবার সকাল থেকে সীমান্তবর্তী এরালিগুল গ্রামের নিহত আসকর আলী ও আরিফ হোসেনের লাশ সীমান্তের ১৩৩১ মেইন পিলারের পাশে ভারতের অভ্যন্তরে পড়ে থাকলে তাদের লাশ হস্তান্তর নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফ এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার পতাকা বৈঠকে আলাপ আলোচনার পরও কোন সুরাহা হয়নি। এনিয়ে কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের দনা ও মিকিরপাড়া এলাকায়  বিজিবি ও বিএসএফ সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক শক্তি বৃদ্ধি করে। স্থানীয় লোকজন ও বিজিবির পক্ষ থেকে এ দুই যুবককে গুলি করে হত্যার জন্য বিএসএফকে দায়ী করা হয়েছিল। উভয় দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনার পর গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪ টায় সীমান্তের ১৩৩১ মেইন পিলারের পাশে নোমেন্সল্যান্ড এলাকায় বিজিবি ও বিএসএফ এর মধ্যে পূণরায় ১ ঘন্টা পতাকা বৈঠকের পর বিএসএফ বাংলাদেশি এ দুই যুবকের লাশ ৩ দিন পর বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে।
পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন জকিগঞ্জ ১৯ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল সুহেল আহমদ অপর দিকে ভারতের পক্ষে বিএসএফের মেঘালয় রাজ্যের কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
পতাকা বৈঠকে বিএসএফ আসকর ও আরিফ হোসেনের হত্যার দায় এড়িয়ে গিয়ে এঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে।
পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে এ হত্যাকান্ডের জন্য বিএসএফকে দায়ী করা হয়। ব্যাপক আলাপ আলোচনার পর বিএসএফ বিজিবির কাছে নিহত দুই যুবকের লাশ বিকেল ৫ টার দিকে হস্তান্তর করে।
তাদের লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য কানাইঘাট থানা পুলিশের হেফাজতে বিজিবি হস্তান্তর করেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
পতাকা বৈঠক ও লাশ হস্তান্তরের পর স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা এ বিষয়ে বিজিবির জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ল্যাফটেন্যান্ট কর্নেল সুহেল আহমদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএসএফকে শেষ পর্যন্ত পতাকা বৈঠকে বাধ্য করে বাংলাদেশের এ দুই যুবকের লাশ নিয়ে আসা হয়েছে।
বিএসএফ আমাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছে এবং তারা এঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেও হত্যার দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে।
এসময় তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এখন অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্র। ভারতসহ যে কোন প্রতিবেশী রাষ্ট্র সীমান্ত এলাকায় আমাদের কোন নিরীহ লোককে হত্যা করা হলে আমরা তাদের উপযুক্ত জবাব দিতে বদ্ধপরিকর রয়েছি।
সীমন্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করলে তাদের হত্যা না করে সীমান্ত আইন মেনে বিচারের সম্মুখীন করা যায়। পতাকা বৈঠকে বিএসএফকে আমরা স্পষ্ট ভাবে সে কথা বলেছি।
এদিকে দুই যুবকের লাশ উদ্ধারের সময় এলাকার শতশত লোকজন মিকিরপাড়া খেলার মাঠ এলাকায় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এলাকার অনেকে বলেছেন,দেরিতে লাশ হস্তান্তরের কারণে লাশ ফুলে অনেকটা পচন ধরেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা