সিলেটে করোনায় আক্রান্ত ডা: মঈন আর নেই

ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেটে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ টিমের সদস্য, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো: মঈন উদ্দিন আর নেই। বুধবার ভোর সাড়ে ৪টায় চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না—রাজিউন)। সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা: শিশির রঞ্জন চক্রবর্তী তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি দুটি অবুঝ শিশু সন্তান ও স্ত্রী পার্ক ভিউ মেডিকেল কলেজের ফিজিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা: রিফাত জাহান এবং তিন বোনকে রেখে গেছেন।

মানব দরদি চিকিৎসক ডা. মঈন সিলেটে করোনা যুদ্ধে প্রথম সারির যোদ্ধা ছিলেন।জানা গেছে, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হন ডা. মঈন। তিনি সিলেটের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী। গত ৫ এপ্রিল আইইডিসিআর থেকে তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। গত ৩০ মার্চ থেকে তিনি তার বাসায় কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকা লকডাউন ঘোষণা করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ৭ এপ্রিল সিলেট নগরীর শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে করোনা আইসোলেশনে সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। ৮ এপ্রিল পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে এ্যম্বুলেন্সযোগে দ্রুত ঢাকায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালেই তার চিকিৎসা চলছিল। সোমবার সকাল থেকে তাকে আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট)-এ নেয়া হয়। আইসিইউকে থাকা অবস্থায় বুধবার ভোর সাড়ে ৪টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ডা: মঈন ছিলেন সিলেটের একজন মেধাবী চিকিৎসক। তিনি মেডিসিনের পাশাপাশি কার্ডিলজিরও চিকিৎসক ছিলেন। এফসিপিএস-এর পাশাপাশি তিনি কার্ডিওলজিতে  এমডি করেন। এ কারণে রোগীদের কাছে তিনি ছিলেন খুবই জনপ্রিয়। তাঁর সহজ, সরল ও সাবলীল ব্যবহার রোগীদের মুগ্ধ করতো।

তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নাদামপুর গ্রামে। গ্রামের স্কুল থেকে পাঠশালা পাশের পর তিনি ধারণ নতুন বাজার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং এমসি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেলে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে এমবিবিএস পাসের পর তিনি এফসিপিএস ও এমডি কোর্স সম্পন্ন করেন। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস(বিসিএস) প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দেন। স্বাস্থ্য ক্যাডারে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনের পর কিছুদিন পূর্বে তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ কলেজের অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুতে কেবল তাঁর জন্মমাটি ছাতক নয়, পুরো সিলেট বিভাগ যেন কাঁদছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকের মন্তব্য-তাঁর মৃত্যু চিকিৎসক সমাজ ও রোগীদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।(সিলেটের সকাল)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা