আর্মি স্টেডিয়ামে চোখের জলে স্বজনদের মরদেহ গ্রহণ

এসটিভি ডেস্ক:: নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার বিমান বিধস্তের ঘটনায়  আর্মি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে নিহতদের মধ্যে ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।সোমবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটের পর এক এক করে মরদেহগুলো স্বজনদের বুঝিয়ে দেয়া হয়। এসময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা কফিনগুলো কাধে করে এ্যাম্বুলেন্সে পৌঁছে দেয়। এ সময় স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে আর্মি স্টেডিয়াম। চোখের জল সামলাতে পারেননি সেখানে অবস্থান করা কেউই। পুরো স্টেডিয়াম জুড়েই শোকের আবহ তৈরি হয়।

বিকেল ৫টার পর এক এক করে লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সগুলো পৌঁছায় স্টেডিয়াম মাঠে। এ্যাম্বুলেন্স থেকে মরদেহগুলো নামিয়ে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়। পরে সেখানে তাদের দ্বিতীয় জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামিত করেন ক্যান্টনমেন্ট জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মাহমুদুল হাসান। প্রথম জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয় নেপালের বাংলাদেশ দূতাবাসে।দ্বিতীয় দফার জানাজা শেষে মরদেহে শ্রদ্ধা জানানো হয়। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের পক্ষের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রমুখ। এরপরেই নাম-পরিচয় ধরে মরদেহগুলো কফিন স্বজনদের কাছে তুলে দেয়া হয়।

এর আগে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মরদেহ বহনকারী বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ একটি ফ্লাইট হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টারমাক-১ এ অবতরণ করে মরদেহবাহী বিমানটি। সেখান লাশগুলো গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার। সেখানে থেকে লাশগুলো বহনকারী নেয়া হয় আর্মি স্টেডিয়ামে।

এর আগে স্থানীয় সময় সোমবার দুপুর ২টার পর ত্রিভুবন বিমানবন্দর থেকে বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইট রওনা হয়। বিমানবন্দরে এসব মরদেহ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

যাদের মরদেহ এসেছে তারা হলেন- ফয়সল আহমেদ, বিলকিস আরা, বেগম হুরুন নাহার বিলকিস বানু, আক্তারা বেগম, নাজিয়া আফরিন চৌধুরী, রকিবুল হাসান, সানজিদা হক, হাসান ইমাম, আখি মণি, মিনহাজ বিন নাসির, এফ এইচ প্রিয়ক, তামারা প্রিয়ন্ময়ী, মতিউর রহমান, এস এম মাহমুদুর রহমান, তাহিরা তানবিন শশী রেজা, উম্মে সালমা, অনিরুদ্ধ জামান, নুরুজ্জামান ও রফিক উজ জামান। বিমানের চার ক্রু- আবিদ সুলতান, পৃথুলা রশীদ, খাজা হোসেন মোহাম্মদ শফি ও শারমিন আক্তার নাবিলা। নিহত অপর ৩ বাংলাদেশির মরদেহ এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া  ইউএস-বাংলার বিমানটি নেপালের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে। নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এ ঘটনায় ৫১ জন নিহত হন। যার মধ্যে ২৬ বাংলাদেশি, অপর নিহতদের মধ্যে ২৩ জন নেপালি এবং মালদ্বীপ ও চীনের একজন করে নাগরিক ছিলেন। আহত ২২ জনের মধ্যে বাংলাদেশি ৯ জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা