আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছেন। নিশ্চয় তিনি আমাকে দিয়ে ভালো কিছু করাতে চান।

অধ্যাপক জাফর ইকবাল তার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, তোমরা দেখিয়েছ ম্যাচিউরড ছেলেমেয়ে হলে কী করতে হয়। এখানেই বসেছিলাম আমরা, যখন আমাকে আঘাত করা হয়েছিল। তার জন্য আমার বিন্দুমাত্র রাগ নাই। মায়া আছে, করুণা আছে। কেন এটা করেছে? বেহেশতে যাবে বলে। এটা তার মাথায় ঢুকানো হয়েছে। একজন মানুষ কত দুঃখী হতে পারে যার মনে হয়, একজনকে মেরে বেহেশতে যাবে। পৃথিবীতে তাকিয়ে দেখো। কী সুন্দর। এ সুন্দর পৃথিবীর কিছুই সে দেখে না, জানে না। কেবল জানে একজনকে মারলে বেহেশতে যাবো।’

বুধবার বিকালে সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয় ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘সাদাসিধে কথা’ শীর্ষক অনুষ্টানে তিনি শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘দেশের মানুষ, আমার প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা আমাকে কতোটা ভালোবাসা দিয়েছে তা আমি ফিরিয়ে দিতে পারবোনা। আমি তাদেরকে আজীবন ভালোবাসবো। আমি জানিনা তোমাদের ভালোবাসার প্রতিদান দিবো।’ পাশাপাশি তিনি খোদার কাছে তিনি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন। তিনি বলেন- আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছেন। নিশ্চয় তিনি আমাকে দিয়ে ভালো কিছু করাতে চান।

তিনি আরো বলেন, ‘এখানেও একজন হয়তো আছে। যে ভাবছে, পারলাম না আরেকবার অ্যাটেম নিতে হবে। তার উদ্দেশে বলছি, আমার সঙ্গে কথা বলতে আসো। অস্ত্রটা বাসায় রেখে আসো। আমি শুনতে চাই, কেন তোমার এত কষ্ট।’

জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমাকে নাস্তিক বলো? আমি কোরআন শরিফ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিখুতঁভাবে পড়েছি। সেখানে একটি আয়াত আছে, তুমি যদি একজনকে মারো, তুমি সারা মানবজাতিকে হত্যা করছো। কেমন করে তারা এত বড় দায়িত্ব ঘাড়ে নেয়। কে তোমাদের এসব বুঝিয়েছে। যারা বুঝিয়েছে তারা নিশ্চিন্তে আছে। আর তুমি, যে কিনা রিমাণ্ডে আছো, তোমার মা, ভাই, বাবা রিমাণ্ডে। যারা এসব কথা বলো, তারা আসো আমার সঙ্গে কথা বলো।’

এসময় তিনি পবিত্র কোরআনের আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন- ‘তুমি যদি একটা মানুষকে হত্যা করো তবে সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করলে। কোরআন শরিফে আছে। যারা তোমাকে বুঝাচ্ছে তারা বিভ্রান্ত করছে। তোমরা একটা মানবজাতিকে যদি বাঁচাও তারা সমগ্র মানবজাতিকে বাঁচিয়েছো। যারা আমাকে এখান থেকে তুলে হাসপাতালে পাঠিয়েছো। তারা সমগ্র মানবজাতিকে বাঁচিয়েছো। আমি তোমাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি সিএমএইচ এর চিকিৎসকের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যারা বিভ্রান্তির পথে রয়েছো তারা আসো আমরা সামনা সামনি কথা বলবো। তোমাদের বিভ্রান্তি দূর করা প্রয়োজন।’

অনুষ্ঠানে বিমানবন্দরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ এবং জাফর ইকবালের স্ত্রী ড. ইয়াসমিন হক বক্তব্য রাখেন। সূত্র সিলেটের সকাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা