এমসি কলেজ গণধর্ষণ মামলার আসামী রবিউল নবীগঞ্জ ও রনি সায়েস্তাগঞ্জ থেকে গ্রেফতার

রাকিল হোসেন:: সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতা রবিউল হাসান (২৮)কে গ্রেফতার করেছে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ। গত রোববার রাত সাড়ে ১০টায় মোবাইল ট্রাকিং ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হবিগঞ্জ সার্কেলের এডিনাল এসপি শেখ সিলিমের নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের নিজ আগনা গ্রামের বাবুল মিয়ার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়,তথ্য-প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ইনাতগঞ্জ নিজ আগনা গ্রাম থেকে রবিউলকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাকে দ্রুত হবিগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযানে আরো অংশ নেন হবিগঞ্জ ডিবি ওসি মানিকুল ইসলামসহ পুলিশের একটি বিশেষ দল। ওবিউল হাসান সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ভর নকতি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের পুত্র।
অপরদিকে রোববার ভোর ৬টার দিকে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার মনতলা নামক এলাকা থেকে অর্জুন লস্করকে (২৬) গ্রেপ্তার করে সিলেট জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এর আগে ছাতক থেকে মামলার প্রধান আসামি ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাছাড়া রোববার (২ ৭ সেপ্টেম্বর) রাতে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে রনিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। গ্রেপ্তারকৃত শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি হবিগঞ্জ সদর থানার বাগুনীপাড়ার শাহ মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে। এ নিয়ে ৬ জনের মধ্যে ৪ জন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলো। সাইফুরের বাড়ি বালাগঞ্জ ও অর্জুনের বাড়ি জকিগঞ্জে।
প্রসঙ্গগত,শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নববধু ধর্ষিত তরুনী তার স্বামীকে নিয়ে সিলেটের এমসি কলেজে ঘুরতে আসেন। ঘুরার এক পর্যায়ে রাত ৮ টার দিকে তরুণীর স্বামী সিগারেট খাওয়ার জন্য এমসি কলেজের গেইটের বাইরে বের হন। এসময় কয়েকজন যুবক তরুণীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যেতে চান। এতে তরুণীর স্বামী প্রতিবাদ করলে তাকে মারধোর শুরু করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। এক পর্যায়ে তরুণী ও তার স্বামীকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এমসি কলেজের হোস্টেলে নিয়ে যান। সেখানে স্বামীকে বেঁধে ছাত্রলীগের তিন-চারজন নেতাকর্মী গাড়ির ভেতরে তরুণীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।
এসময় তাদের সঙ্গে থাকা ৯০ টি মডেলের একটি প্রাইভেট কারও ছিনিয়ে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে প্রাইভেট কারটি তাদের জিম্মায় নেয় এবং তরুণীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) তে প্রেরণ করে।
শনিবার ভোরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই তরুণীর স্বামী।
এজহারনামীয় আসামীরা হলেন, এম. সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক আহমদ, অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। এদের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আসামীদের মধ্যে তারেক ও রবিউল বহিরাগত, বাকিরা এমসি কলেজের ছাত্র।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা ধর্ষণ মামলার আসামি রবিউলকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত বলেন, আমাদের ডিবি পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা