করোনার ভ্যাকসিন বিতরণ ও প্রয়োগের জন্য ইংল্যান্ড প্রস্তুত

মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, লন্ডন: দীর্ঘ মৃত্যুর মিছিল, অসংখ্য পরিবারের আপনজন হারানোর বুকফাটা আর্তনাদ, অজানা আশংকা এবং নাম না জানা ভীতির সঞ্চারের পর শেষ পর্যন্ত করোনার ভ্যাকসিন সরবরাহ, বিতরণ ও প্রয়োগের জন্য ইংল্যান্ড প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র নিশ্চিত করেছে। আগামি ১০ দিনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বিতরণের জন্য প্রস্তুত থাকার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে ইংল্যান্ডের হাসপাতালগুলোকে। আগামি ৭ ডিসেম্বরের মধ্যেই ফাইজার/বায়োএনটেকের ভযাকসিন হাতে পাওয়া যেতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) কর্মকর্তারা। ভ্যাকসিন হাতে পেলেই প্রথমে তা স্বাস্থ্যকর্মিদের ওপর প্রয়োগ করা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান। এতে বলা হয়, এনএইচএসের শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং ইংল্যান্ডের হাসপাতালগুলো প্রত্যাশা করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের কয়েকদিনের মধ্যে ফাইজার/বায়োএনটেকের উৎপাদিত ভ্যাকসিন প্রথম সরবরাহ তাদের হাতে আসবে ৭ ডিসেম্বর, সোমবার নাগাদ। বিভিন্ন

হাসপাতালের সূত্রগুলো বলেছেন, এনএইচএস ইংল্যান্ড বলেছে, তারা প্রত্যাশা করছে ৭, ৮ অথবা ৯ ডিসেম্বর নাগাদ তাদের হাতে চলে যাবে এই টিকা। প্রাথমিকভাবে এই টিকা ব্যবহার করা হবে শুধু স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য। এরপর কেয়ারহোমের বাসিন্দা এবং যাদের বয়স ৮০ বছরের কোটায় তাদেরকে দেয়া হবে ভ্যাকসিন। করোনা রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সরকার এই দুটি গ্রুপকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছে। কারণ, করোনায় তাঁদের মৃত্যুর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

তবে কেয়ার সেক্টরের প্রধানরা সরকারের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, সরকারের এ পদক্ষেপকে দেখা হবে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে। অপরদিকে, সেপ্টেম্বরে জয়েন্ট কমিটি অন ভ্যাকেশন এন্ড ইমিউনাইজেশন (জেসিভিআই), সরকারের উপদেষ্টারা এ নিয়ে বৈঠক করেছেন। তাতেই সিদ্ধান্ত হয়েছে কোন গ্রুপকে ভ্যাকসিন দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারে রাখা হবে। তাঁদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেয়ার হোমে থাকা বয়স্ক মানুষ এবং সেখানকার স্টাফদের অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।

দ্বিতীয় অগ্রাধিকারে রাখা হয় ৮০ বছরের বেশি যাঁদের বয়স তাঁদেরকে এবং স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবা দিয়ে থাকেন এমন সব মানুষকে। শুক্রবার এই নির্দেশনা আবার জারি করেছে এনএইচএস।
তবে ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। এতে যেসব উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে এবং যে তাপমাত্রায় তা রাখার কথা বলা হয়েছে, তাতে সীমিত সময়ের জন্য এটা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেয়া যেতে পারে। এর ফলে স্বাস্থ্যসেবার স্টাফ, কেয়ার হোম এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রাইভেট বাসায় এই ভ্যাকসিন পৌঁছে দেয়া কঠিন হতে পারে।

এ জন্য এনএইচএস নতুন করে চিন্তা করছে কিভাবে এই টিকা ব্যবহার করা যায়। এর অধীনে বেলজিয়ামের কারখানায় ফাইজারের টিকা উৎপাদনের পর সরাসরি তা নিয়ে আসা হবে ব্রিটেনে। সেখানকার স্টোরেজ থেকে সরাসরি পাঠিয়ে দেয়া হবে হাসপাতালে, সেখানেই এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা