নবীগঞ্জে এক ডিমের মসজিদ

ডেস্ক রিপোর্ট ::ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়’ এই চিরন্তন বাক্যটির  সত্যতা মিলেছে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জের নিভৃত পল্লীতে। এ অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন এক মহীয়সী নারী।
স্বামীর অঢেল সম্পদ থাকলেও শুধু নিয়ত (মানত) করার কারণে একক প্রচেষ্টায় তিল তিল করে গড়ে তোলেন এই মসজিদ। আজ  থেকে ১২০ বছর আগে জনৈক বেঙ্গির মায়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নির্মিত হয়েছিল মসজিদটি।
কে সেই বেঙ্গির মা। হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের প্রজাতপুর গ্রামের  নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রাকিল হোসেনের নানা তৎকালীন জমিদার সরফ উল্লার সৎ মাই হচ্ছেন বেঙ্গির মা।
আর তার নামেই মসজিদটির নামকরণ অর্থাৎ বেঙ্গির মায়ের মসজিদ।
শতবর্ষ পরেও আজ  মসজিদের অভ্যন্তরে নিয়ন বাতিতে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে ‘প্রজাতপুর ও লালাপুর জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠাতা বেঙ্গির মা’। শুধু নিয়নবাতি কেন এলাকাবাসীর অন্তরে যা আজও তার নাম উজ্জ্বলতর তারকা হয়ে আছেন তিনি।
সবাইকে অবাক করে দিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছেন তিনি। তাকে সবাই ‘বেঙ্গির মা’ বলে ডাকলেও একটি মহৎ উদ্যোগ নিয়ে একটি আণ্ডা বা ডিম থেকে গড়ে তুলেছেন একটি মসজিদ।
এলাকাবাসী নাম দিয়েছেন ‘এক আন্ডার মসজিদ’। মসজিদটির নাম এখন সবার মুখে মুখে। এক আণ্ডা থেকে কীভাবে এক মসজিদ, সে কথা শুনলে সবাই অবাক হন। বেঙ্গির মা বাংলাদেশে জন্ম দিয়েছেন এক ইতিহাস।
জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের প্রজাতপুর গ্রামের তৎকালীন জমিদার সরফ উল্লার সৎ মা বেঙ্গির মা ১৯০২ ইরেজি ও ১৩০৭ বাংলা সনে প্রজাতপুর ও লালাপুর দুটি গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদ নির্মাণ শেষে এলাকাবাসীকে একত্র করে মসজিদটির নামকরণ করেন ‘এক আন্ডার মসজিদ’।
তখন মসজিদের নামকরণ নিয়ে জনতার মধ্যে প্রশ্ন জাগলে তিনি ঘটনাটি খুলে বলেন। বেঙ্গির মা এলাকাবাসীকে জানান, ডিম বিক্রি করে টাকা জমিয়ে মসজিদটি নির্মান করেন। বেঙ্গির মা ছিলেন নিঃসন্তান।  মসজিদ নির্মাণের শত বছর অতিবাহিত হলেও এখনো এ কাহিনী সবার মুখে মুখে।
অনেকেই মনে করেন, একটি ডিম থেকে একটি মসজিদ নির্মাণের ঘটনা ইতিহাসে এই প্রথম। তাও আবার একজন মহিলা কর্তৃক মসজিদ নির্মাণ সবাইকে অবাক করেছে।
বর্তমানে প্রজাতপুর ও লালাপুর গ্রামবাসী
 মসজিদটি সংস্কার করে সৌন্দর্য বর্ধন করেছেন।
মসজিদ নির্মাণে বেঙ্গির মায়ের এক আণ্ডার গল্প শুনে অবাকই হয়েছেন। ইচ্ছা থাকলে মানুষ কিনা করতে পারে। তার ছেলেসন্তান না থাকলেও এ মসজিদটি পৃথিবী যত দিন থাকবে তত দিন সাক্ষী হয়ে রবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা