নোয়াখালী হাতিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

নুরুন্নবী নবীন, নোয়াখালী প্রতিনিধি :: ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াসের’ প্রভাবে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে এখনো বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় ঘটেনি। উপজেলার হরনি ইউনিয়নের বয়ার চরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে ইয়াস মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বয়ার চরসহ আশপাশের কয়েক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। প্রস্তুত করা হয়েছে ১৮১টি আশ্রয়কেন্দ্র। যাতে ৮০ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতা রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষ যাতে সহজে আসতে পারেন সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, সাইক্লোন শেল্টারে মানুষকে নিয়ে আসা ও খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হবে। চর আতাউর, ঢালচর, চর ঘাশিয়াতে বসবাসরতদের তমরুদ্দি ইউনিয়ন ও সুখচর ইউনিয়নে নিয়ে আসা হবে। কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ৩০-৩৫ জন স্বোচ্ছাসেবক ওয়ার্ডভিত্তিক কাজ করবেন। গঠন করা হয়েছে মেডিকেল টিম। সিপিপির পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, ইয়াস মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করব আমরা।

হরনি ইউনিয়নের বয়ার চরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত। নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, ইয়াস থেকে মেঘনা উপকূলীয় বাসিন্দাদের রক্ষায় ৩৯০ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। দুর্যোগের আগে ও পরে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ১০৯ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। দুর্ঘটনা থেকে রক্ষার জন্য জেলা-উপজেলা প্রশাসন, জেলা-থানা পুলিশ বাহিনী, স্বাস্থ্য বিভাগের হটলাইন নম্বরগুলো ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে। নম্বরগুলো জনসাধারণের জন্য প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দুর্যোগ মুহূর্তে মেঘনা উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন চাল, দুই কোটি ৪৪ লাখ টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য নয় লাখ ও গো-খাদ্যের জন্য নয় লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১৪ লাখ টাকা ও ৩০০ মেট্রিক টন চাল মজুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় থেকে জনগণকে রক্ষা করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া উপজেলা মেঘনা নদীবেষ্টিত। যেকোনো সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ দ্বীপটির ওপর আঘাত হানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা