ফসলরক্ষা বাঁধে গত বছরের তুলনায় মাটির মুল্যে ৬ গুন বেশি, চলছে হরিলুটের মহোৎসব

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::জেলায় অধিকাংশ ফসলরক্ষা বাঁধে প্রতি ঘনমিটার মাটির মূল্যে গেল বছরের তুলনায় কোন কোন বাঁধে ৩ গুন আবার কখনও ৬ গুন বেশি ধরা হয়েছে। ফলে বরাদ্দের পরিমান বেশি হওয়ায় টাকার সিংহভাগ চলে যাচ্ছে পিআইসিদের পকেটে। চলছে হরিলুটের মহোৎসব। পাউবো সুত্রে জানাযায়, গেল বছর আগাম বোর ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল ১১ কোটি টাকা, প্রতি ঘন মিটার মাটির মূল্য ছিল ১২৮ টাকা। চলতি বছর ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১২২ কোটি টাকা ও প্রতি ঘন মিটার মাটির মুল্য অধিকাংশ বাঁধে ধরা হয়েছে গেলো বারের চেয়ে ৩ থেকে ৬ গুন অর্থাৎ ৩ শ থেকে ৭ শ টাকা। বাঁধ নির্মাণকাজের সার্ভে রিপোর্ট তৈরিতে অনিয়মের কারনে বরাদ্দ বেশি দেয়া হয়েছে। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা গচ্ছা যাচ্ছে। এতে পিআইসিদের টাকা লুটপাটের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে বলে দাবী স্থানীয় সচেতন মহলের। সম্প্রতি শাল্লা উপজেলার উদঘলবিল হাওর উপপ্রকল্পের বাঁধ নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্প নং ১৮ এর ১৬০ মিটার দৈর্ঘ্য বাঁধের ৩৭০৭.৫৫ ঘনমিটার মাটির জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৩ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা। এতে প্রতি ঘনমিটার মাটির মূল্যে ধরা হয়েছে ৬৩৬ টাকা।

একই হাওরের প্রকল্প নং-১৯ এর ৩৫৫২.৮৮ ঘন মিটার মাটির জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২২ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। এতে প্রতি ঘনমিটার মাটির মূল্যে ধরা হয়েছে ৬৩২ টাকা। তাহিরপুর উপজেলার মাতিয়ান হাওরের উপপ্রকল্পের পিআইসি নং ৪১ এর ১২৪৮৬ ঘন মিটার মাটির জন্য বরাদ্দ দেয় হয় ৩১ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা। এতে প্রতি ঘনমিটার মাটির মূল্য ধরা হয়েছে ২৫৪ টাকা। হাওর বাঁচাও, সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু বলেন, চলতি বছরের ফসলরক্ষা ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় বাঁধ, বাঁধের কাজের চেয়ে বরাদ্দের পরিমান বেশি হয়েছে বিষয়টি আমরা সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেছি। এক্ষেত্রে বিল প্রদানের ক্ষেত্রে যেন বাঁধের কাজের পরিমাপ করে বিল দেয়া হয়। তাহলেই সরকারি টাকার অপচয় হবেনা। সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেরগুল আহমেদ বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর লিফট দেখিয়ে বরাদ্দ বহুগুন বাড়ানো হয়েছে। ফলে প্রয়োজনীয় বাঁধের কাজ শেষ করেও উদ্বৃত্ত টাকা পিআইসিদের পকেটে যাবে। এতে সরকারি টাকার অপচয় হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু বলেন, গেলবার যারা আন্দোলন করেছে, তাদের মধ্যে কিছু মানুষ হাওরের অনিয়ম নিয়ে ব্যাক্তি স্বার্থে আন্দোলন করেছে, এ বছর আরো বেশি লুটপাট হচ্ছে। বরাদ্দ বেশি হওয়ায় পিআইসিদের লুটপাটের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক ভুইয়া বলেন, গত বছর প্রতি ঘনমিটার মাটির মূল্য ছিল ১২৮ টাকা, এ বছরে ১৬৮ টাকা অর্থাৎ প্রতি ঘনমিটারে ৪০ টাকা বেড়েছে। ৬ শ টাকা প্রতি ঘনমিটার যেখানে ধরা হয়েছে সেখানে হয়তো বাঁশ,বস্তা ইত্যাদি থাকতে পারে,ইস্টিমিট দেখলে বুঝা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা