মাহির সঙ্গে মনের মিল হচ্ছিলো না-অপু

ডেস্ক রিপোর্ট ::ভালোবাসার কমতি ছিল না। এখনো নেই। একে অপরকে এখনো ভালোবাসি। কিন্তু তার সঙ্গে মনের মিল হচ্ছিলো না। এ কারণে আলাদা হচ্ছি।’- বাংলা সিনেমা জগতের বর্তমান সময়ে জনপ্রিয় নায়িকা মাহিয়া মাহির স্বামী সিলেটের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপু মানবজমিনের কাছে এ কথা জানিয়েছেন। বললেন- ‘ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিলেও এখনো আমরা আনুষ্ঠানিক কোনো কিছুই করিনি। ডিভোর্স দেয়ার প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করা হবে। এবং খুব দ্রুত এটি সমাপ্তও হবে।

এখানে অন্য সিদ্ধান্ত নেয়ারও কোনো সুযোগ নেই। আমরা দু’জন আর এক থাকছি না।’ নায়িকা মাহিয়া মাহি ও তার স্বামী পারভেজ মাহমুদ অপুর সংসারে ভাঙনের খবরটি গতকাল সকাল থেকে সিলেটে ছিল আলোচিত বিষয়। সবখানেই ছিল এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা। সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কদমতলী এলাকার স্বর্ণশিখা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা পারভেজ মাহমুদ অপু। পারিবারিকভাবেই তারা সিলেটে প্রতিষ্ঠিত। এবং সিলেটের মানুষের কাছে তাদের পরিবারের পরিচিতি রয়েছে। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তানও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিয়ার স্বামী অপু। ফলে নিজ এলাকা ছাড়াও সিলেটে রয়েছে তাদের আলাদা পরিচিতি। কদমতলি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মান্নানের ছেলে তিনি। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। বড় ভাই লন্ডন প্রবাসী এবং বাকি দুই ভাই লেখাপড়া করছেন। অপু যুক্তরাজ্য থেকে কম্পিউটার প্রকৌশল নিয়ে পড়ালেখা করে এখন তার বাবার কয়লা ব্যবসা ও দুটি ইটভাটা দেখাশুনা করেন। তবে অপু সিলেটে তেমন পরিচিত না। বেশির ভাগ সময় তিনি ঢাকায় অতিবাহিত করেছেন। ২০১৬ সালের ২৫শে মে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে বিয়ে করেন সিলেটের বাসিন্দা পারভেজ মাহমুদ অপু। একে অপরকে বিয়ের আগে থেকেই ভালোবাসতেন। ভালোবেসেই বিয়ে করেন। তাদের বিয়ে নিয়েও সিলেটে ছিল বেশ কৌতূহল। সবচেয়ে বেশি কৌতূহলী ছিলেন কদমতলী এলাকার মানুষ। সব কৌতূহল ছাপিয়ে বিয়ের পর চিত্রজগতের এই নায়িকাকে বধূ হিসেবে সাদরে বরণ করে নিয়েছিলেন পরিবার ও এলাকার মানুষ। তাকে নিয়ে উচ্ছ্বাস ছিল আত্মীয়স্বজনের মধ্যে। বধূ হিসেবে মাহিকে দেখতে এলাকার মানুষের মধ্যে আগ্রহের কমতি ছিল না। স্বামীর সঙ্গে মাহিয়া মাহি বাড়ি এলে সবার সঙ্গে দেখা হতো। একজন বধূ হিসেবে মাহি স্বামীর ঘরে স্বাভাবিক ভাবেই ছিলেন তিনি। বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের সুখে সংসারের ঘটনার ছবিও দেখা গেছে। ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপু জানালেন- ‘এখনো আমরা একে অপরকে ভালোবাসি। দু’জনের মধ্যে একটি সুন্দর সম্পর্ক ও সম্মানের জায়গা আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের মধ্যে মনের মিল হচ্ছিলো না। এ কারণে আমরা ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন সেটি ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তীতে আমরা আনুষ্ঠানিক কাজও শেষ করে ফেলবো।’ তিনি জানান, ‘আমাদের এই ডিভোর্সের সঙ্গে পরিবারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। পরিবার পরিবারের জায়গায় আছে। আমরা নিজেরাই কথা বলে আলাদা হচ্ছি। পরিবারের সঙ্গে মাহিয়া মাহির কোনো দূরত্ব ছিল না, এখনো নেই বলে জানান অপু।’ ঢাকা ও সিলেটে রয়েছে মাহিয়া মাহির স্বামী অপুর ব্যবসা। এ কারণে ঢাকা ও সিলেটের ব্যবসা নিয়ে তাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। ঢাকার উত্তরায় তার বাসা রয়েছে। বিয়ের পর থেকে মাহিয়া মাহি স্বামীর সঙ্গে থাকলেও কখনো কেউ কারো পেশায় প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়াননি। অপু ব্যবসায়ীক কাজে সপ্তাহে অন্তত একবার সিলেটে আসতেন। এ কারণে মাহিয়া মাহিও স্বামীর সঙ্গে ঢাকা ও সিলেটে যাতায়াত করতেন। অপু জানিয়েছেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমরা দু’জনই ঢাকা ও সিলেটে আসা-যাওয়া করি। সপ্তাহে অন্তত একবার সিলেটে আসি। খুব বেশি কাজ না থাকলে মাহিয়া মাহিও সিলেটে আসতেন। কাজ থাকলে অবশ্য ঢাকাতেই থাকতেন। আর যখন কাজ থাকতো না তখন আমরা দু’জন এক সঙ্গে সিলেটে আসা-যাওয়া করতাম।’ তিনি জানিয়েছেন, করোনাকালেও তারা একসঙ্গে ছিলেন। এই সময়ে তারা সিলেটে যাওয়া-আসা করেছেন। বর্তমানে তারা দু’জন আলাদা রয়েছেন বলে জানিয়েছেন অপু।
বিচ্ছেদের কারণ জানালেন মাহি: ওদিকে মাহি বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা আলাদা হয়ে গেছি। তবে বিস্তারিত বলতে চাই না। আমি চাই না বিষয়টি নিয়ে কোনো নেতিবাচকতা ছড়াক। মানুষের জীবনে তো কত কিছুই ঘটে। ভাগ্যের ওপরও নির্ভর করে অনেক কিছু। তবে যাই হোক আমি অপুকে সব সময় সম্মান করি। বিচ্ছেদের কারণ প্রসঙ্গে মাহি বলেন, আমাদের মধ্যে বোঝাপড়ায় কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিলো। আর এ বিষয়টির কারণেই সম্পর্কটা শেষ পর্যন্ত টিকলো না। আরো কিছু বিষয় ছিল। মাহি সংবাদমাধ্যমের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপনাদের কাছে অনুরোধ, প্লিজ, আমাদের অসম্মান হোক তেমন কিছু চাই না। বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে অপু বলেন, আমরা মিউচুয়ালি সিদ্ধান্তে এসেছি একসঙ্গে না থাকার। কাগজে কলমে এখনো ডিভোর্স হয়নি, তবে দ্রুতই প্রক্রিয়া শুরু হবে। এদিকে এরআগে শনিবার রাত ১টা ৩০ মিনিটে বিচ্ছেদ নিয়ে নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন মাহি। সেখানে তিনি লিখেছেন, এই পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো মানুষটার সঙ্গে থাকতে না পারাটা অনেক বড় ব্যর্থতা। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শ্বশুরবাড়ির মানুষগুলোকে আর কাছ থেকে না দেখতে পাওয়াটা, বাবার মুখ থেকে মা জননী, বড় বাবার মুখ থেকে সুনামাই শোনার অধিকার হারিয়ে ফেলাটা সবচেয়ে বড় অপারগতা। ক্ষমা চেয়ে মাহি আরো লেখেন, আমাকে মাফ করে দিও। তোমরা ভালো থেকো। আমি তোমাদের আজীবন মিস করবো। পোস্টে তার বিচ্ছেদের খবরটি প্রকাশ করলেও এর কারণ সম্পর্কে তখন জানাননি মাহি। উল্লেখ্য, সিলেটের মাহমুদ পারভেজ অপুর সঙ্গে ২০১৬ সালের ২৪শে মে বিয়ে হয় মাহিয়া মাহির। অবশেষে পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানলেন এই নায়িকা। এরআগেও বেশ কয়েকবার মাহি-অপুর বিচ্ছেদের গুঞ্জন ওঠে। এবার পাকাপাকিভাবেই বিচ্ছেদে গেলেন তারা। সূত্র: মানবজমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা