ইংল্যান্ডে আসছে কারফিউর ঘোষণা : রাত ১০টার পর পাব-রেস্টুরেন্ট বন্ধ

মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, লন্ডন: করোনার প্রাদুর্ভাব কমাতে জরুরী প্রদক্ষেপ হিসেবে ইংল্যান্ডে বৃহস্পতিবার থেকে রাত ১০টার পর সকল পাব, বার ও রেস্টেুরেন্ট বন্ধের ঘোষনা আসছে। আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত আটটায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জাতির উদ্দেশ্যে এই ঘোষণা দেন।

আজ সকালে মন্ত্রীদের সাথে এ বিষয়ে বিশেষ বৈঠক শেষ করে কোবরা মিটিংয়ে যোগদেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকার ভাবছে যাতে স্কুল এবং কাজের স্থানসমূহ খোলা রেখে দেশব্যাপী রেস্টুরেন্ট পাব বন্ধ করে স্বল্পকালিন সময়ের জন্য জাতীয় লকডাউন করা।
একই সাথে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দিয়ে, মাস্ক ব্যবহার, নিয়মিত হাত ধোয়া, ৬ বেশি এক সাথে চলাফেরা না করা সম্ভব হলে ঘর থেকে কাজ করা এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে ৩০ জনের স্থলে ১৫ জনে নামিয়ে আনা হতে পারে।

করোনাভাইরাসের ৪ মাত্রার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর অর্থ হলো করোনার সংক্রমন দ্রুত বাড়ছে।

বিজ্ঞানীদের এলার্ট। ইংল্যান্ড, নর্দান আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তারা এলার্ট লেভেল তিন থেকে চারে উন্নীত করেছেন। এর অর্থ উচ্চ মাত্রায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে বৃটেনে। এ জন্য জোরপূর্বক সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এমন প্রেক্ষাপটে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় নতুন পদক্ষেপ নিয়ে আজ মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এতে তিনি ইংল্যান্ডজুড়ে বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা থেকে সব পাব, বার এবং রেস্তোরাঁ জোর করে বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেবেন। একে অনলাইন স্কাইনিউজ করোনাভাইরাস কারফিউ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এতে বলা হয়, বরিস জনসব বৃটিশ পার্লামেন্টের হাউজ অব কমন্সে বিবৃতি দেয়ার পর টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন।

স্কাই নিউজকে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেছেন, তিনি রাজধানীতে ১৫টি নতুন বিধিনিষেধ প্রস্তাব করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে অধিক মানুষ যেসব এলাকায় অবস্থান করবেন সেখানে মাস্ক পরতে হবে। বিয়ে বা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান সীমিত করতে হবে। অধিক মানুষকে কাজ করতে হবে ঘরে বসে।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন প্রকাশ করবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সকাল সাড়ে আটটায় মন্ত্রীপরিষদের বৈঠক করবেন। সেখানে ডাউনিং স্ট্রিটের প্রস্তাবকে মন্ত্রীরা অনুমোদন দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এরপরে জনসন সিনিয়র মন্ত্রী, কর্মকর্তা, স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসের ফার্স্ট মিনিস্টার যথাক্রমে নিকোলা স্টার্জন এবং মার্ক ড্রেকফোর্ড, নর্দান আয়ারল্যাসেন্ডর ফার্স্ট মিনিস্টার ও ডেপুটি ফার্স্ট মিনিস্টার আরলেন ফস্টার ও মিশেলে ও’নেইলকে নিয়ে কোবরা কমিটির জরুরি বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন। এরপর তিনি দুপুর সাড়ে ১২টায় হাউজ অব কমন্সে বিবৃতি দেবেন। তারপর টেলিভিশনে ভাষণ দেবেন। স্থানীয় সময় রাত ৮টায় সেই ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

শনিবার মন্ত্রীপরিষদকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফ করেন ইংল্যান্ডের প্রধান মেডিকেল অফিসার প্রফেসর ক্রিস হুইটি, প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক ভ্যালেস, প্রধান অর্থনীতিবিদ ক্লেয়ার লোম্বার্ডেলি। রোববার সন্ধ্যায় এসব বিষয় নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক।

প্রফেসর হুইটি এবং স্যার প্যাট্রিক জানান দেন, সাত দিনের মধ্যে করোনা ভাইরাস বর্তমানের দ্বিগুন হতে পারে। যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে তাহলে মধ্য অক্টোবরে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৫০ হাজার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা