গান্ধী আশ্রমকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করার উদ্যেগ নিলে সরকার এ শুভ পদক্ষেপের সঙ্গে থাকবে- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

নোয়াখালী প্রতিনিধি::মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, গান্ধী আশ্রমকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন (Centre of Excellence) করার উদ্যেগ নিলে সরকার এ শুভ পদক্ষেপের সঙ্গে থাকবে। শান্তির দূত মহাত্মাগান্ধীর আদর্শের অনুসারী মানুষ আর সমাজের সেবায় জীবন উৎসর্গকারী গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট এর প্রয়াত সেক্রেটারি শ্রীমতি ঝর্ণা ধারা চৌধুরী ত্যাগের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, তা আমাদেরকে উদ্বুদ্ধ করবে এবং আগামি প্রজন্মের কাছে শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। আমাদেরকে সে পথে চরতে পারার কৌশল দেখিয়ে গেছেন। নিজকে নিয়ে ভাবার জন্য আমাদের জন্ম হয়নি, সবার জন্য এবং সৃষ্টির ভাবনার জন্য আমাদের সৃষ্টি হয়েছে। শ্রীমতি ঝর্ণা ধারা চৌধুরী তাদেরই একজন। কোন সীমার মধ্যে এদের ত্যাগ সীমাবদ্ধ নয়। বিশাল গন্ডিতে না হলেও, এ অঞ্চলে তিনি তাঁর কীর্তি রেখে গেছেন। তিনি আগামী প্রজন্মের অনুপ্রেরণা।

তিনি দুপুরে নোয়াখালী সোনাইমুড়ি উপজেলার জয়াগ গ্রামে গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট এর সভাপতি স্বদেশ রায়ের সভাপতিত্বে এবং গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট এর পরিচালক রাহা নব কুমার এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রয়াত সেক্রেটারি শ্রীমতি ঝর্ণা ধারা চৌধুরীর স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ের সময়, আমরা যদি অন্তত তাঁকে অনুসরণ করি, তাহলে আমাদের অনেক উন্নতি হবে। দেশের সমস্ত নাগরিক তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা পালন করতে পারছে। কারণ, রাষ্ট্র এবং ধর্ম সম্পূর্ণ আলাদা। ঝর্ণা ধারা তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন, শান্তি, সম্প্রীতি এবং অহিংসা প্রতিষ্ঠার জন্য। তাঁর যে স্বপ্ন ছিল, তা বাস্তবায়ন এবং আরো সম্প্রসারণ করা আমাদের মানবিক দায়িত্ব।

ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রীমতী রীভা গাঙ্গুলি দাশ বলেন, আজকের এ স্বার্থপর বিশ্বে শ্রীমতি ঝর্ণা ধারা চৌধুরী ছিলেন অন্যের জন্য নিবেদিত। শৈশবে দেখা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার স্মৃতি তাঁকে মহাত্মা গান্ধীর আদর্শের পথে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে। সেই থেকে তিনি বিশ্বের কল্যাণে তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ভারত ও বাংলাদেশের শান্তি, সামাজিক, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং বন্ধুত্বের প্রতি তার অবদান স্মরনীয় হয়ে থাকবে। আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী গান্ধী আশ্রমকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছি এবং এ সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। পরে, তিনি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এস জয় শঙ্কর এর পাঠানো একটি শোকবার্তা পরে শোনান।

স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মুনতাসির মামুন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রীমতী রীভা গাঙ্গুলি দাশ, চাটখিল ও সোনাইমুড়ি আসনের সংসদ সদস্য এ এইচ এম ইব্রাহিম, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ডা: কামরুল আহসান, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন এফ.সি.এ, বিশিষ্ট গবেষক ড. শাখাওয়াত হোসেন, নোয়াখালী নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আবদুল আউয়াল এবং তাঁর পরিবারের সদস্য পার্থ সারথি চৌধুরী।

এছাড়াও চট্রগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় সহকারি হাই কমিশনার শ্রী অনিন্দ্য ব্যানার্জি, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী, ট্রাস্টি এডভোকেট মাঈন উদ্দিন খসরু, জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস, পুলিশ সুপার মো: আলমগীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ২ জুন মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারনে মহাত্মাগান্ধির আদর্শের অনুসারী জয়াগ গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের সচিব শ্রীমতি ঝর্ণাধারা চৌধুরীকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৩ জুন থেকে তিনি হাসপতালের নিবিড় পরিচর্যা (আইসিইউ) কেন্দ্রে ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টা ৩৪ মিনিটে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা