বাংলাদেশি বংশদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক শামিমাকে ব্রিটেনে ফিরতে দেয়া অনুচিত: ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টে রাষ্টপক্ষ

মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, লন্ডন: জঙ্গি সংগঠন আইএস-এ যোগ দেয়া বাংলাদেশি বংশদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক শামিমাকে ব্রিটেনে ফিরতে দেয়া অনুচিত বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট।

ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে লন্ডন থেকে সিরিয়ায় পাড়ি জমানো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামিমা বেগম নিরাপত্তায় ঝুঁকি হওয়ার কারণে তাকে আইনি লড়াইয়ের জন্য যুক্তরাজ্যে ফিরতে দেওয়া উচিত হবে না বলে শুনানিতে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি।গত সোমবার শামিমা বেগমের যুক্তরাজ্যে ফেরার মামলায় সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে একথা বলেছে সরকার পক্ষ।

ব্রিটিশ সরকারের আইনজীবী জেমস এডি আদালতকে বলেন, “আইএস এর সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা আছে তারা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি বলেই গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অভিমত।” জেমস এর কথায়, এই মূল্যায়নই বলে দেয় তিনি (শামিমা) এখনও হুমকি, তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়াটাও যুক্তিযুক্ত। আর জাতীয় নিরাপত্তার দিক বিবেচনায় তাকে যুক্তরাজ্যে ফিরতে বাধা দেওয়াই উচিত।

২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাত্র ১৫ বছর বয়সে আরও দুই ব্রিটিশ কিশোরীর সঙ্গে যুক্তরাজ্য ছেড়েছিলেন শামিমা। সিরিয়ায় আইএস উৎখাত অভিযানে আশ্রয় হারিয়ে তার ঠাঁই হয় শরণার্থী শিবিরে। ২০১৯ সালে শরণার্থী শিবিরে শামিমার খোঁজ মেলার পর তিনি দেশে ফিরতে চাইলে সাবেক ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তার যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব বাতিল করেন। এরপর শামিমা তার আইনজীবীর মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেছিলেন।

তার যুক্তি ছিল, ব্রিটিশ সরকার ‘অবৈধভাবে’ তাকে রাষ্ট্রহীন করেছে এবং তার জীবনকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। তাছাড়া, যুক্তরাজ্যে ফিরতে না পারলে তার পক্ষে আইনি লড়াইও ঠিকমত চালানো সম্ভব নয়।

গত জুলাইয়ে ওই আবেদনের রায়ে লন্ডনের আপিল আদালত বলেছিল, “নাগরিকত্ব পেতে শামিমাকে সুষ্ঠু এবং কার্যকরভাবে আইনি প্রক্রিয়া চালাতে দেওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে তাকে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি দেওয়া।” ব্রিটিশ সরকার ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পর মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে যায়। সোমবার থেকে সুপ্রিম কোর্ট দুইদিনের জন্য মামলার শুনানি শুরু করেছে। আর এতেই শামিমাকে ফিরতে না দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দেন সরকারপক্ষের আইনজীবী জেসম।

শুনানি শেষ হলে সুপ্রিম কোর্ট পরবর্তী কোনও একটি দিনে মামলার রায় জানাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা