আজ ১২ ডিসেম্বর গোবিন্দগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: আজ ১২ ডিসেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে ৯ মাস যুদ্ধের সমাপ্তি হয় এ দিনে। ১১ ডিসেম্বর ভোর রাতে মুক্তিকামী বাঙালি ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের কাটাখালী ব্রিজে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মুক্তিকামী বাঙালির ত্রিমূখী আক্রমনে নিহত হয় দুই শতাধিক পাকহানাদার বাহিনীর সদস্য। ১২ ডিসেম্বর শক্রু মুক্ত হয় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা। বিজয়ের স্বাদ পান মুক্তিকামী ও সাধারণ মানুষ। ওই দিন আনন্দ, উল্লাসে মুক্তিকামি ও ছাত্র জনতা সমাবেশে ওড়ানো হয় লাল সবুজের বিজয়ের পতাকা।

স্বাধীনতার ইতিহাস থেকে ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় গণহত্যার খবর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে গোবিন্দগঞ্জে পৌঁছিলে পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীকে প্রতিহত করতে গণপরিষদ সদস্য মরহুম জামালুর রহমান প্রধান, ন্যাপের সভাপতি মরহুম ফারাজ মোল্লা, ছাত্রলীগের সভাপতি মরহুম আব্দুল মতিন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক মরহুম ছাদেকুল ইসলাম প্রধান এর নেতৃত্বে স্বাধীনতা পাগল বীর বাঙালী জনতা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করে সংগ্রাম কমিটি গঠন করে। এ সংগ্রাম কমিটি কাটাখালী ব্রিজটি ধ্বংস করে পাকিস্থানী বাহিনীর অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এর জন্য ২৬ মার্চ চলে সংগ্রাম কমিটির প্রস্তুতি। ২৭ মার্চ সকালে শত শত মুক্তি পাগল তরুন, যুবক, ছাত্র জনতা কোদাল, শাবল, হাতুড়ি, খুন্তি ইত্যাদি নিয়ে ট্রাক যোগে কাটাখালীতে জড়ো হয়। সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কাটাখালী ব্রীজ ধ্বংস করার কাজ শুরু হয়। ব্রিজের উত্তর পাশের কিছু অংশ ভাঙ্গা হলে হঠাৎ করে রংপুর দিক থেকে পাক হানাদার বাহিনীর একটি কনভয় ছুটে আসে ব্রীজের কাছে। কনভয়টি পৌঁছেই এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে মুক্তি পাগল বাঙালীর উপর। এ সময় দিকবিদিক ছুটে পালায় অনেকে। পাক বাহিনীর এলোপাথাড়ি গুলিতে শহিদ হন আব্দুল মান্নান, বাবলু মোহন্ত, বাবু দত্ত সহ অজ্ঞাত পরিচয় এক কিশোর ও বৃদ্ধ। তখন থেকে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১১ ডিসেম্বর ভোর রাতে হিলি, গাইবান্ধা, বোনাপাড়া ও মহিমাগঞ্জ থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধাদেও ত্রিমুখী আক্রমনে প্রায় দুই শত পাকসেনা নিহত হয় এবং অনেক পাকসেনা প্রাণ ভয়ে অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়। এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১২ ডিসেম্বর জয় বাংলা শ্লোগানে গোবিন্দগঞ্জের আকাশ বাতাস প্রকল্পিত করে মুক্তিযোদ্ধা ও ছঅত্র জনতা গোবিন্দগঞ্জ হাইস্কুল মাঠে সমবেত হয়ে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা উত্তোলণ করার মধ্যে দিয়ে হানাদার মুক্ত হয় গোবিন্দগঞ্জ।

এ দিকে ১২ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক , সামাজিক সংগঠন দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা