কবিরহাটে গণধর্ষণের ঘটনায় ৩ আসামীর সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ

নোয়াখালী প্রতিনিধি::নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নবগ্রামে গত শুক্রবার মধ্যরাতে তিন সন্তানের জননীকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোমবার মানববন্ধন-সমাবেশ করা হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামী জাকির হোসেন জহিরের শনিবার বিকেলে ১৬৪ ধারায় স্বাকারোক্তিমূলক জবানবন্দী ভিত্তিতে গতকাল আটকৃত তিন আসামীকে আজ আদালতে সোপর্দ করে সাতদিন করে রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। এছাড়াও মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে, গণ ধর্ষনের স্বীকার তিন সন্তানের জননী সোমবার সন্ধায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, আটক কৃত জহির ছাড়া অপর তিনজনকে হয়রানি করার জন্য আটক করা হয়েছে। তিনি(ভিকটিম) বলেন, তারা যদি জড়িত থাকতো আমি অবশ্যই তাদেরকে চিনতে পারতাম। আমার দেবর মান্না কে আমি ৬ বছর থেকে চিনি। আমি শুধু জহিরকে ঘটনার সময় চিনতে পেরেছি। এ ঘটনায় জহির কেন আমার দেবর ও ভাগিনা সহ ৩জনকে জড়িয়ে কথা বলছে তা বুঝতে পারছিনা। আমি চাই প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া হোক।
অপরদিকে তার ভিকটিমের স্বামী আবুল হোসেন রবিবার কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। তিনি সোমবার সন্ধায় হাসপাতালে স্থানীয় সাংবাদিকদেরকে জানান, আমি বিএনপি সমর্থক এটা সত্য। অভিযুক্ত জহিরের প্ররোচনায় আমাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। এখন আমার স্ত্রীর উপর ও নির্যাতন করা হয়েছে। আমার বিশ^াস আমার ভাই ও ভাগিনা এ ঘটনার সাথে জড়িত নহে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কবির হাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মির্জা মোহাম্মদ হাছান জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী জাকির হোসেন জহিরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আরো ৩জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে হয়রানি করার উদ্যেশ্যে গ্রেফতার করা হয়নি।

বিচারের দাবীতে সোমবার দুপুরে জেলা শহর মাইজদী টাউন হল মোড়ে নারী মুক্তি কেন্দ্র নোয়াখালীর শাখার ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় সমাজতান্ত্রিক দল মার্কসবাদী ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট সংহতি জানিয়েছে। সমাবেশে বক্তরা গ্রেপ্তারকৃত প্রধান আসামী ও জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তার পূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী করেন। একই সঙ্গে মামলাকে ভিন্ন খাতে নিয়ে সাধারণ মানুষকে যাতে হয়রানি করা না হয় সেদিকে খেলার রাখার জন্যও পুলিশের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।

এ দিকে কবিরহাট থানা পুলিশ সোমবার দুপুরে প্রধান আসামীর তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তারকৃত নির্যাতিতার সৎ দেবর ও ভাগিনা সহ ৩ জনকে আদালতে সোপর্দ করেছে। তাদের প্রত্যেকের সাতদিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। এছাড়া মামলাটি তদন্তের জন্য ও অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের তাগিদ দিয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখায় হস্তান্তর করা হয়েছে। কবিরহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) টমাস বড়–য়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ জাতীয় আরো খবর..

ফেসবুকে আমরা